নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রবর্তন | প্রকাশিতঃ ১৫:২৯, ০৬ নভেম্বর ২০১৯
নতুন সড়ক আইন নিয়ে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে জনমনে। এরইমধ্যে মামলা, জরিমানার এড়াতে বৈধ কাগজপত্র নিতে ভিড় শুরু হয়েছে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়ে।
যদিও এখনো পুরোদমে কার্যকর হয়নি নতুন আইনে মামলা। মোটরসাইকেল চালকদের এখনো পুরনো আইনে মামলা দেয়া হচ্ছে। হাতে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে নতুন আইনের নিয়ম কানুনের লিফলেট। বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে আইন সম্পর্কে।
চলতি মাসের শুরু থেকে কার্যকর হয়েছে নতুন সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮। নতুন এ আইন বাস্তবায়নে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জোর প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
মঙ্গলবার বিআরটিএ’তে আসা মোটরসাইকেল চালক আল-আমিন বলেন, আমার গাড়ির কাগজপত্র আপডেট রয়েছে। কিন্তু লাইসেন্স নেই। তাই সেটা নিতেই আজ তিন ঘণ্টা ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গাড়ির নম্বর প্লেট, ফিটনেস সনদ ও লাইসেন্স সংগ্রহে দীর্ঘ লাইন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে আছে শত শত মানুষ। হঠাৎ এমন বাড়তি চাপে হিমশিম খেলেও, বিষয়টিকে বেশ ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে কর্তৃপক্ষ ।
সাজেদুল ইসলাম নামের এক প্রাইভেটকার মালিক বলেন, গাড়ির ফিটনেস সনদ নিতে বিআরটিএ অফিসে এসেছি। এতদিন কেনো করা হয়নি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আসলে তেমন জরুরি ছিল না। আবার সময়ও পেতাম না। কিন্তু এখন যে নতুন আইন হয়েছে, না এসে আর পারলাম না।
এদিকে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন আইন হওয়ার আগে বিআরটিএ অফিসে এতো লোকের সমাগম হতো না। কিন্তু নতুন আইনের শাস্তির ভয়ে পরিবহন মালিক ও চালকরা সচেতন হতে শুরু করেছে। তাই, নম্বর প্লেট, ফিটনেস সনদ ও ড্রাইভিং লাইসেন্স সংগ্রহের জন্য আবেদন করতেই ভিড় জমাচ্ছেন অনেকেই।
এ বিষয়ে বিআরটিএ’র উপ-পরিচালক প্রকৌশলী শফিকুজ্জামান ভূঞা গণমাধ্যমকে জানান, ১ নভেম্বর থেকে নতুন আইন কার্যকর হওয়ায় চালকদের ভিড় বেড়েছে। বিশেষ করে গত দু’দিন সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। শাস্তির ভয়ে মালিক ও চালকরা সব ধরণের কাগজপত্র ঠিক করতে ভিড় জমাচ্ছেন।
চালকদের মাঝে পরিবর্তন আসছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের এ সেন্টারে (মিরপুর) দু’টি ডিজিটাল মেশিন রয়েছে। তবে বিআরটিএ’র ভেতরে জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে আরো ১২টি ফিটনেস পরীক্ষার মেশিন বসানোর কাজ চলছে। সেটা হলে একসঙ্গে অনেক গাড়ির ফিটনেস পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। এতে চালকরাও স্বস্তিতে থাকবেন। আমরা চাই যানবাহনের সব কাগজপত্র আপডেট করেই সবাই রাস্তায় নামুক।
বিআরটিএতে দালালের দৌরাত্ম কমাতে প্রশাসন সজাগ রয়েছে জানিয়ে আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) ওয়াহেদ মিয়া জানান, সাধারণ মানুষ যাতে কোনো ভোগান্তিতে না পরেন সে জন্য সজাগ রয়েছে প্রশাসন। তারপরও দালালদের দৌরাত্ম থেমে নেই। গত দু’দিনে প্রায় ১৪ জন দালালকে আটক করে শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে সোমবার এক ব্রিফিংয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আইন অমান্য করে কোনো ট্রাফিক পুলিশ যাতে অবৈধ সুবিধা নিতে না পারেন সে জন্য তাদের গায়ে ক্যামেরা লাগানো হবে।
এ সময় ট্রাফিক পুলিশকে সতর্ক করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, নতুন আইনের ধারা নিয়ে কোনো ট্রাফিক পুলিশ অনৈতিক সুবিধা নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।