নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রবর্তন | প্রকাশিতঃ ১৪:০০, ৩১ অক্টোবর ২০১৯
মসজিদ-মন্দির ও শ্মশানের অনুদানের অর্থ পকেটে ভরেছেন সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম। এসএম নজরুল ইসলাম পৌর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সভাপতি।
পৌর এলাকার ঘোষগাতি মৃধাবাড়ি জামে মসজিদ, ঘোষগাতি মহাশ্মশান ও ঘোষগাতি শিবমন্দিরের নামে বরাদ্দকৃত অনুদানের দেড় লাখ টাকা এখনো পায়নি প্রতিষ্ঠানগুলো। অনুদানের ওসব টাকা মেয়র আত্মসাৎ করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালকরা।
জানা যায়, উল্লাপাড়া পৌরসভার মেয়র এসএম নজরুল ইসলাম দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সব কাজে অনিয়ম-দুর্নীতি করে পৌরসভাকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। সব কাজে দুর্নীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।২০১৬-১৭ অর্থবছরে উল্লাপাড়ার ঘোষগাতি মৃধাবাড়ি জামে মসজিদের নামে ৫০ হাজার টাকা এডিপি থেকে বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু দুই বছর অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত মসজিদের বরাদ্দের টাকা দেননি মেয়র।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের জন্য এডিপি থেকে ঘোষগাতি মহাশ্মশানের জন্য ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয় ও ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ঘোষগাতি শিব মন্দিরের জন্য ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। দুই বছরেও বরাদ্দকৃত টাকা পায়নি প্রতিষ্ঠানগুলো।
গত ১ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবনা জেলা কার্যালয় থেকে সহকারী পরিচালক আতিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে পৌরসভার মেয়র নজরুলের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের রেকর্ডপত্র দুদক কার্যালয়ে পাঠানোর জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়।
অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি পৌর মেয়র নজরুলের দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাতের রেকর্ডপত্রসহ নির্বাচনী হলফনামা দুর্নীতি দমন কার্যালয়ে পাঠান উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান। এরপরই মেয়র নজরুল ইসলামের অনিয়ম ও দুর্নীতির খাতগুলো বেরিয়ে আসে।
ঘোষগাতি মৃধাবাড়ি জামে মসজিদের সভাপতি ফজলুল হক মৃধা বলেন, অনেকবার পৌর মেয়রের কাছে গিয়েও আমাদের বরাদ্দকৃত টাকা পাইনি। পরে শুনেছি মেয়র নজরুল ইসলাম আমাদের মসজিদের টাকা তুলে মেরে দিয়েছেন।
ঘোষগাতি শিব মন্দির কমিটির সভাপতি মদন কুমার কর্মকার বলেন, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে এডিপি থেকে ৫০ হাজার টাকা মন্দিরের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। ওসব টাকা মেয়র নজরুল ইসলাম গোপনে তুলে আত্মসাৎ করেছেন। মন্দিরের টাকা আত্মাসাতের ঘটনায় মেয়র নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দেব আমরা।
ঘোষগাতি মহাশ্মশান কমিটির সেক্রেটারি বাবলু কুমার ভৌমিক বলেন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এডিপি থেকে ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয় আমাদের মন্দিরে। কিন্তু মেয়র নজরুল ইসলাম গোপনে মহাশ্মশান কমিটিকে না জানিয়ে ৫০ হাজার টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন। আগামী সপ্তাহের মধ্যে মহাশ্মশানের ৫০ হাজার টাকা আমাদের না দিলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ দেয়া হবে।
এ বিষয়ে উল্লাপাড়া পৌরসভার মেয়র এসএম নজরুল ইসলাম বলেন, এডিপির বরাদ্দে কিছু সমস্যা হয়। তবে ঘোষগাতি মহাশ্মশান, ঘোষগাতি শিব মন্দির ও ঘোষগাতি মৃধাবাড়ি জামে মসজিদের নামে বরাদ্দকৃত দেড় লাখ টাকা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো পায়নি। দুই বছরেও কেন এসব প্রতিষ্ঠান বরাদ্দকৃত অর্থ পায়নি সে প্রশ্নের উত্তর দেননি পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম।