নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রবর্তন | প্রকাশিতঃ ১০:৪৭, ৩০ অক্টোবর ২০১৯
ইলিশ প্রজননে ২২ দিন ইলিশ শিকার বন্ধ থাকায় নীরব-নিস্তব্ধ উপকূলীয় মৎস্যবন্দর আবার সরব হয়ে উঠেছে। দীর্ঘ ২২দিন অলস সময় কাটিয়ে আবার ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন উপকূলের জেলেরা। ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞার নির্ধারিত সময় বুধবার (৩০ অক্টোবর) ১২টা পর্যন্ত। সকালের সূর্য ওঠার আগেই পাথরঘাটার জেলেরা ছুটবেন সমুদ্রপানে। দীর্ঘ অবসর সময় পরিবারের সঙ্গে কাটিয়ে মাঝি-মাল্লারা ফিরে এসেছেন মহাজনদের আড়তে।
ইতোমধ্যেই ট্রলারে তেল, বরফ, সরদ তুলে সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছেন সাগরে যাবার। বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) পাথরঘাটা শাখা এবং পৌর শহরের প্রধান বাজারে মুদি মনোহরী দোকানে জেলেদের বাজার-সদাই করার ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
মাঝি ইউসুফ, সেলিম, আলম ফিটার ও জাকির জানান, অবরোধের আগের দিন ৮ অক্টোবর সাগর থেকে ফিরে আসেন তারা। পরের দিন বাড়িতে চলে যান। এই দীর্ঘ অবসর সময়টা ট্রলার ও জাল মেরামতের পাশাপাশি পরিবারের সঙ্গেই কাটিয়েছেন তারা। তাদের প্রত্যেকের ট্রলারে মোট ১৭ থেকে ২০ জন জেলে। সবাই সাগরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে মহাজনের আড়তে ফিরেছেন।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুম আকন বলেন, অবরোধের সময়ের মধ্যে জাল, ট্রলার মেরামত করে সাগরে যাবার উপযুক্ত করে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বুধবার অবরোধের শেষ দিন। মধ্য রাতেই সাগরের উদ্দেশে রওনা হবে উপকূলের ট্রলারগুলো।
জেলে মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, বিগত বছরের মতো এবারও বরগুনার জেলেরা শতভাগ সরকারের নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করেছে। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে কোনো জেলেকে নদী-সাগরে জাল ফেলতে দেখা যায়নি।
তিনি আরও বলেন, ইলিশ প্রজনন ঘটাতে সরকার সফল হয়েছে। এখন জাটকা রক্ষা করতে পারলে আগামীতে ইলিশ আরও কয়েক গুণ বাড়বে বলে মনে করি।
তবে বরাবরের মতো এ নিষেধাজ্ঞার সময় ভারতীয় জেলেদের মাছ ধরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আক্ষেপ করেন তিনি।
পাথরঘাটা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিষেধাজ্ঞা মধ্যে অসাধু জেলেদের ইলিশ শিকারের খবর পাওয়া গেলেও উপকূলীয় বরগুনা তার ব্যতিক্রম। এখানকার কোনো জেলে নিষিদ্ধ সময়ে নদী-সাগরে জাল ফেলেনি। জেলে, মহাজনসহ সর্বস্তরের মানুষের আন্তরিক সহযোগিতায় এবারের অবরোধ সফল হয়েছে।
চলতি বছরের ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে দ্বিতীয়বারের মতো ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ আহরণ, পরিবহন, বাজারজাতকরণ, কেনা-বেচা, মজুদ ও বিনিময় সম্পূর্ণ বন্ধ রাখে সরকার।