নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রবর্তন | প্রকাশিতঃ ১৬:২৬, ২৯ অক্টোবর ২০১৯
জাতীয় সম্মেলনের পর অধিভুক্ত অর্ধেক ইউনিট কমিটি গঠন করেছে জাতীয় শ্রমিক লীগ। অধিকাংশ কমিটি সম্মেলন না করেই হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০১২ সালের ১৭ জুলাই সংগঠনটির সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর দীর্ঘ সময় পার হয়েছে। আসছে ৯ নভেম্বর পরবর্তী জাতীয় সম্মেলন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সম্মেলন ঘিরে ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দের মধ্যে। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় শীর্ষ দুই পদ লাভে আওয়ামী লীগের শীর্ষ মহলে জোর লবিং শুরু হয়েছে। প্রায় অর্ধডজন প্রার্থী ওই দুই পদ লাভের প্রত্যাশা করছেন। সংগঠনটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
তারা বলছেন, ৩৫ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটির অধীনে সারাদেশে রয়েছে ১০০টি ইউনিট। যার মধ্যে রয়েছে অঞ্চল ও জেলা ভিত্তিক ইউনিট। সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, মহানগর, জেলা, শিল্পাঞ্চল/আঞ্চলিক শাখা, বৈদেশিক শাখা, মহিলা কমিটি ও যুব কমিটির ক্ষেত্রে ৭১ সদস্যের কমিটির কথা বলা রয়েছে। অন্যদিকে উপজেলা/থানা/পৌরসভা, ওয়ার্ড/ইউনিয়ন ও প্রাথমিক শাখার জন্য ৪৫ সদস্যের কমিটি করার কথা বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংগঠনটির এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের অন্তর্ভুক্ত ১০০টি ইউনিট আছে। এর বাইরেও অনেকে নিজেদের জাতীয় শ্রমিক লীগের অন্তর্ভুক্ত ইউনিট বলে দাবি করেন। ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে থাকলে অনেক সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায়। সেজন্য এখন কতগুলো ইউনিট আছে সেটা বলা মুশকিল।
জাতীয় শ্রমিক লীগ সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালের ১৭ জুলাই সংগঠনটির সর্বশেষ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জের শ্রমিক নেতা শুকুর মাহমুদ সভাপতি, ফজলুল হক মন্টু কার্যকরী সভাপতি এবং সোনালী ব্যাংক ট্রেড ইউনিয়নের নেতা সিরাজুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। তারপর আর সম্মেলন হয়নি। এর আগে ২০০৩ সালের ৩ জুলাই সংগঠনটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
জাতীয় শ্রমিক লীগ সূত্রে জানা গেছে, বিগত সাত বছরে ৬৪টি জেলা ইউনিটের মধ্যে কাগজে-কলমে ৩৫টি জেলা কমিটি গঠন করা হয়েছে। অনেক জেলায় সম্মেলন না করেই কমিটি দিয়েছেন কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সংগঠনটির ২৫টি জেলা ইউনিটের সম্মেলন বাকি বলে জানা গেছে।
১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জাতীয় শ্রমিক লীগ ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন হলেও রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন। গত ৩ অক্টোবর জাতীয় শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলামকে চিঠি দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। চিঠিতে আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে সম্মেলন সম্পন্ন করতে বলা হয়।
সংগঠনটির প্রভাবশালী এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে জোর তদবির চালাচ্ছেন। প্রার্থিতা ঘোষণার কথা না থাকলেও অনেকে নিজেদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করছেন কিংবা ধর্ণা দিচ্ছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে।
সভাপতি পদ পেতে আগ্রহী বর্তমান কার্যকরী সভাপতি, সহ-সভাপতিসহ অন্তত ছয় প্রার্থী। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদ পেতে তিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, একজন সাংগঠনিক সম্পাদক, প্রচার সম্পাদকসহ অন্তত ছয় প্রার্থী রয়েছেন।
জাতীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর বলেন, নেত্রী যেখানে রাখেন সেখানেই থাকব।