সৌ‌দিতে ধরপাকড় অব্যাহত, এক দিনেই দেশে ফিরলেন ২০০ বাংলাদেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রবর্তন | প্রকাশিতঃ ১৬:৫৭, ২৬ অক্টোবর ২০১৯

সৌ‌দি আরবে বাংলাদে‌শি শ্রমিকদের ধরপাকড় ও দেশে ফেরত পাঠানো অব্যাহত রয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কাজের বৈধ অনুমোদন (আকামা) থাকা সত্ত্বেও শুক্রবার রাতে ২০০ বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি। এ নিয়ে চলতি বছ‌র ১৬ হাজারের বে‌শি বাংলাদেশি সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরত এসেছে।

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সর্বশেষ ওই ২০০ জন বিমানযোগে বাংলাদেশে ফেরেন। বরাবরের মতো এবারও দেশে ফেরা কর্মীদের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় বিমানবন্দরে জরুরি খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য সহায়তা প্রদান করে ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচি।
তিনি উল্লেখ করেন, চলতি বছ‌র ১৬ হাজারের বে‌শি বাংলাদেশি সৌদি আরব থেকে ফেরত এসেছে। চলতি মাসেই ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের সহযোগিতায় ৮০৪ জন জনকে ব্র্যাক সহযোগিতা করেছে। এর মধ্যে একদিনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক কর্মী এলেন গতকাল শুক্রবার।

জানা যায়, সংসারে সচ্ছলতা আনতে মাত্র পাঁচ মাসে আগে বহু স্বপ্ন নিয়ে সৌদি আরব গিয়েছিলেন কুড়িগ্রামের আকমত আলী। ‌কিন্তু তার সে স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্ন। তার অভিযোগ, আকামার মেয়াদ আরও ১০ মাস থাকলেও তাকে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ফেরত আসা গোপালগঞ্জের ছেলে সম্রাট শেখ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আট মাসের আকামা ছিলো তার। নামাজ পড়ে বের হলে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার কোন কিছুই না দেখে দেশে পাঠিয়ে দেয়।

ফেরত আসা সাইফুল ইসলামের বাড়ি নারায়ণগঞ্জে। তার অ‌ভিযোগ, আকামার মেয়াদ দেখানোর পরেও তাকে দেশে পাঠানো হয়। সাইফুল বলেন, সবে মাত্র নয় মাস আগে সৌদি গিয়েছিলেন, আকামার মেয়াদও ছিলো ছয় মাস।

চট্টগ্রাম জেলার আব্দুল্লাহ ব‌লেন, আকামা তৈরির জন্য আট হাজার রিয়াল জমা দিয়েছেন কফিলকে, কিন্তু পুলিশ গ্রেপ্তারের পর কফিল কোন দায়িত্ব নেয়নি।

‌ফেরত আসা কর্মীরা সরকারকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দা‌বি জানান। আর কাউকে যেন তাদের মতো পরিস্থিতির শিকার হয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য করা না হয় সে দা‌বিও করেন তারা।

ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান বলেন, ফেরত আসা কর্মীরা যেসব বর্ণনা দিচ্ছেন সেগু‌লো মর্মা‌ন্তিক। সাধারণ ফ্রি ভিসার নামে গিয়ে এক নিয়োগকর্তার বদলে আরেক জায়গায় কাজ করতে গিয়ে ধরা পড়লে অনেক লোক ফেরত আসতো। কিন্তু এবার অনেকেই বলছেন, তাদের আকামা থাকার পরেও ফেরত পাঠানো হচ্ছে। বিশেষ করে যাওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই অনেককে ফিরতে হচ্ছে যারা খরচের টাকার কিছুই তুলতে পারেননি।

তিনি আরও বলেন, রিক্রু‌টিং এজেন্সিগুলোকেই এই দায় নিতে হবে। পাশাপাশি নতুন করে কেউ যেন গিয়ে এমন বিপদে না পড়ে সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top