চলমান করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে লাপাত্তা ভারতের মহারাষ্ট্রের অন্তত ৬০০ সরকারি চিকিৎসক। বেশ কিছুদিন ধরেই তাদের কোনো হদিস নেই। করোনার রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার ভয়ে তারা পালিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এজন্য এসব চিকিৎসককে ‘পলাতক’ ঘোষণা করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কাজে যোগ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগ। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এমনকি সবার লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে বলেও সতর্কতা জারি করা হয়েছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
ভারতের সর্বাধিক করোনাপীড়িত রাজ্যগুলোর অন্যতম মহারাষ্ট্র। সংক্রমণ ও মৃত্যুতে রীতিমতো দিশেহারা অবস্থা। রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতালগুলো। চিকিৎসক ও চিকিৎসকের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
মহারাষ্ট্র ডিরেক্টরেট অব হেলথ সার্ভিসের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, করোনার এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই অনুপস্থিত রয়েছেন রাজ্যের বহু সরকারি মেডিকেল অফিসার। অনেকেই ‘স্টাডি লিভ’ (পড়াশোনা করার লক্ষ্যে নেয়া ছুটি) নিয়ে বিদেশে গিয়েছেন।
কিন্তু পড়াশোনা শেষ হলেও দেশে ফিরছেন না তারা। অনুপস্থিত এই চিকিৎসকদের সংখ্যা প্রায় ৬০০ জন। হাসপাতালে চিকিৎসকদের এই অনুপস্থিতির বিষয়টি নিয়ে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারে এখন তোলপাড় অবস্থা। তৎপর হয়ে উঠেছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও।
খবরে বলা হয়েছে, ক্ষমতাসীন এনসিপি সরকার এ ব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। সংশ্লিষ্ট ওই চিকিৎসকদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করার চিন্তাভাবনা করছে রাজ্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপের নেতৃত্বাধীন রাজ্য পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্ট।
এছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ভারতের ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট, এপিডেমিক ডিজিজেস অ্যাক্ট ও মহারাষ্ট্র সিভিল সার্ভিস রুলসের বিধি ভঙ্গের অভিযোগ আনার সুপারিশ করার কথাও বলা হয়েছে।
অনুপস্থিত মেডিকেল অফিসার বা চিকিৎসকদের ‘পলাতক’ ঘোষণা করে ইতোমধ্যে একটি নোটিশ জারি করেছেন মহারাষ্ট্র পাবলিক হেলথ ডিপার্টমেন্ট’র জয়েন্ট সেক্রেটারি এমএস থোম্বার। ওই নির্দেশনায় চিকিৎসকদের আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তাদের নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে যোগদার করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে।
কাজে যোগদান করতে ব্যর্থ হলে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট, এপিডেমিক ডিজিজেস অ্যাক্ট ও অন্যান্য আরও কিছু আইন ভঙ্গের অভিযোগ আনা হবেও হুশিয়ারি দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে গ্রেফতারপূর্বক তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হতে পারে।
এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা যদি কাজে যোগ দিতে ব্যর্থ হন কিংবা যথাযথ কারণ না দর্শান তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে কঠিন পদক্ষেপ নেয়া হবে।’
ট্রায়ালের আগেই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিতে পারে ভারতও : যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষার আগেই করোনা ভ্যাকসিনের ‘জরুরি অনুমোদন’ দিতে পারে ভারতও।
বৃহস্পতিবার ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ’ (আইসিএমআর) এমনটাই জানিয়েছে। আইসিএমআর জানিয়েছে, পরিস্থিতি বিবেচনা করে হয়তো প্রত্যাশিত সময়ের অনেক আগেই মিলতে পারে ভারতে তৈরি করোনা প্রতিষেধক।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের ডিরেক্টর জেনারেল ড. বলরাম ভার্গব জানান, এমনিতে কোনো টিকার তৃতীয় বা চূড়ান্ত পর্যায়ের হিউম্যান ট্রায়াল শেষ হতে ৬-৯ মাস সময় লাগে। তবে যদি সরকার সিদ্ধান্ত নেয়, সেক্ষেত্রে জরুরি অনুমোদনের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে।