কাল থেকে রাজধানীতে জোন ভিত্তিক লকডাউন, বুধবার সারাদেশে

দেশে ৬৬ দিনের সাধারণ ছুটি, গণপরিবহন-শপিংমল বন্ধসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে কোনো কার্যক্রমেই সফলতা আসেনি। প্রতিদিন টেস্ট বাড়ছে, রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও।

এই প্রবণতা রোধ করতে এবার সংক্রমণের মাত্রার ওপর ভিত্তি করে রাজধানীসহ সারাদেশকে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে ভাগ করে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কর্মপন্থা বাস্তবায়নে কাজ করতে যাচ্ছে সরকার।

বিশেষ করে যেসব এলাকায় বেশি করোনা রোগী শনাক্ত হবে সেসব এলাকা রেড জোনের আওতায় এনে লকডাউন করে দেওয়া হবে।

আগামীকাল রবিবার থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হবে এই কার্যক্রম। পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হওয়া এই কার্যক্রমে সফলতা আসলে এই পন্থায় আগানো হবে। এরই মধ্যে একটি অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। যার মাধ্যমে আগামী বুধ বা বৃহস্পতিবার থেকে জোনিং ব্যবস্থা পুরোদমে বাস্তবায়ন করবে সরকার। আর প্রযুক্তিগত সহায়তার কাজটি করছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ ও এটুআই।

তবে, খুব বড় এলাকায় হয়ত এটা করা যাবে না। শহরের ওয়ার্ড বা মহল্লাভিত্তিক রেড জোন ঘোষণা করে তা ব্লক করে দেওয়া হবে। তাই ঢাকায় হয়তো বেশি আক্রান্ত থাকা অনেকগুলো এলাকাকে রেড জোন ঘোষণা করা হবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের একাধিক সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

মন্ত্রণালয়টির একজন কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকায় প্রতি এক লাখে যদি ৩০ জন বা এর বেশি মানুষ করোনায় আক্রান্ত থাকে তবে সেটাকে রেড জোন বলা হবে। ৩ জনের বেশি কিন্তু ৩০ জনের কম থাকলে তবে সেই এলাকাকে ইয়েলো জোন বলা হবে। এক বা দু’জন বা কেউ না থাকলে সেটাকে গ্রিন জোন বলা হবে।

এর আগে ১ জুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ বেশ কয়েকজন মন্ত্রী-সচিবদের একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে শেষে গণমাধ্যমে বলা হয়, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে রাজধানী ঢাকাসহ পুরো দেশকে রেড, ইয়েলো ও গ্রিন—এই তিন জোনে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যেসব এলাকায় করোনার সংক্রমণ বেশি সেসব এলাকাকে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। ওই এলাকার লোকদের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। বাইরে থেকেও রেড জোনে লোকদের প্রবেশ সীমিত করার উদ্যোগ নেবে সরকার। আর যেসব এলাকায় করোনার সংক্রমণ কম, সেসব এলাকাকে ইয়েলো জোন হিসেবে চিহ্নিত করে আক্রান্তদের ঘরবাড়ি লকডাউন করে সংক্রমণের বিস্তার ঠেকানো হবে। যেসব এলাকায় এখনও করোনা রোগী পাওয়া যায়নি, সেসব এলাকায় যাতে বাইরের কেউ ঢুকতে না পারে, সে ব্যবস্থা করা হবে।

এদিকে গত ৩১ মে থেকে সীমিত পরিসরে সব কিছু খুলে দেওয়া হলেও স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে মানুষকে খুবই কম সর্তক হতে দেখা গেছে। গাদাগাদি করে চলাচল, লোকসমাগম, জুম্মায় সামাজিক দূরুত্ব বজায় রাখাসহ কোনকিছুই চোখে পড়ছে না। এ কারণে করোনার সংক্রমণ বেশি ছড়াচ্ছে।

করোনা সংক্রান্ত মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, ‘আগামীকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় রেড জোনে লকডাউনের কার্যক্রম শুরু হবে। সেই সঙ্গে প্রত্যাশা করা হচ্ছে, সারাব্যাপী আগামী বুধবারের মধ্যে জোনিং করে লকডাউন কার্যক্রম শুরু হবে।’

কিভাবে লকডাউন করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘একটি এলাকা চিহ্নিত করে সেখানকার প্রতি এক লাখ মানুষের মধ্যে কতজন মানুষ আক্রান্ত রয়েছে, সেই অনুযায়ী রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে সেটি পড়বে। রেড জোন ঘোষণা এলাকা সম্পূর্ণ ব্লক থাকবে। সেই এলাকায় কেউ ঢুকবেও না, কেউ বেরও হবে না।’

তবে, সেসব এলাকার নিত্যপ্রয়োজনীয় যেসব জিনিসের দরকার হবে তা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top