আওয়াল শেখ: খুলনা মহানগরীতে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। আর শনাক্ত হওয়া রোগীরা অধিকাংশই পৃথক পৃথক এলাকার বাসিন্দা। এতে জালের মত বিস্তৃত ভাবে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা ভাইরাস। এ পরিস্থিতিতে খুলনা লকডাইন হবে কি-না সে ব্যাপারে আগামী সোমবার (৮ জুন) করোনা সংক্রমন প্রতিরোধ কমিটি সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
খুলনা সিভিল সার্জনের দপ্তর থেকে জানা গেছে, এ পর্যন্ত জেলায় মোট ১৫৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মহানগরীর মধ্যে রয়েছে ৯১ জন, দিঘলিয়ায় ২৪ জন, রূপসায় ১৪ জন, ডুমুরিয়ায় ৭ জন, দাকোপে ৬ জন, বটিয়াঘাটা ৩ জন, তেরখাদায় ৩ জন, ফুলতলায় ২ জন পাইকগাছায় ২ জন ও কয়রায় ১ জন। আর করোনায় মারা গেছেন ৪ জন। যার মধ্যে রূপসায় ৩ ও দিঘলিয়ায় ১ জন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৪৩ জন। পুরোপুরি সুস্থ হয়েছেন ৩৬ জন।
তবে শহরে শনাক্ত হওয়া ৯১ জনের অধিকাংশ পৃথক পৃথক এলাকার বাসিন্দা হওয়ায় একটি ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতে শহরের মানুষ আগের তুলনাই অনেকটাই কম বাইরে বের হচ্ছে। দোকান পাটেও কম পরিমানে জনসমাগম দেখা যাচ্ছে। তবে সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারে সকলকে সচেতন হতে দেখা যায়নি। এ ব্যাপারে খুলনার করোনা প্রতিরোধ কমিটির দায়িত্বশীলরা কি সিদ্ধান্ত নিবেন তার দিকে চেয়ে আছেন নগরবাসী। এই নিয়ে প্রবর্তনের সাথে কথা হয় খুলনার করোনা প্রতিরোধ কমিটির কয়েকজন দায়িত্বশীলদের সাথে।
খুলনা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ বলেন, শহরে যে ভাবে করোনা ছড়িয়েছে তার মূল কারণ হলো বাইরে থেকে এখানে লোকর প্রবেশ হওয়া। উপজেলাগুলোতে বাইরের লোক কম আসায় সেখানে সংক্রমণের সংখ্যাও কম। এই পরিস্থিতিতে শহরের মানুষকে অধিক সচেনতন হওয়া ছাড়া উপায় নাই। এখনি লকডাউনটি মনে হয় পুরোপুরি সমাধান হবে না। শুধুমাত্র লকডাউন করে করোনা মোকাবিলা করা যায় না। এতে একই স্থানে বেশি সংক্রমনের সম্ভাবনা থাকে। যদি সীমিত পরিসরে দোকন পাট খোলা রেখে ও মানুষকে আরো কম পরিমানে বাইরে আনা যায় তাহলে ভালো হবে। তবে সিদ্ধান্তটা নেওয়া হবে কমিটির সভায়। লকডাউন হবে কিনা তা কমিটির সিদ্ধান্ত ব্যতিত বলা যাবে না।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, বর্তমানে শহরের অবস্থা ভালো না। এই পরিস্থিতিতে আগামী সোমবারে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা চাচ্ছি সপ্তাহে সাত দিনের মধ্যে তিন দিন দোকান পাঠ খোলা রেখে বাকি চার দিন বন্ধ রাখা যায় কি-না। তবে নিত্য প্রয়োজনীয় নিজিসপত্রের দোকান সপ্তাহে ৭ দিনই খোলা রাখা হবে। তবে সোমবারে করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভার আগে কিছু বলা যাচ্ছে না।
খুলনা শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি কাজি আমিনুল ইক বলেন, শহরের করোনা পরিস্থিতিতে দোকান পাঠ খোলা রাখলেও বেচা কেনা তেমন নেই। ব্যবসায়ীরা বার বার ফোন করে জানাচ্ছেন কিভাবে ঘর ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, কর্মচারীদের বেতনসহ অনুসাঙ্গিক খরচ চালাবে। শহরে প্রায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান শুধুমাত্র দোকান বা এ জাতীয় ব্যবসার থেকে। আর ছোট বড় সব মিলে খুলনা জেলায় প্রায় ৩ লাখ মানুষ এই কর্মসংস্থানের সাথে জড়িত। এ প্রেক্ষাপটে সীমিত আকারে কিভাবে দোকান পাট খোলা রাখা যায় তা ভাবা হচ্ছে। আমরা ভাবছি সপ্তাহে মাত্র কয়েকদিন দোকান পাট খোলা রাখা যায় কি-না। তবে এ বিষছে খুলনা করোনা প্রতিরোধ কমিটি যে সিদ্ধান্ত নিবে তাই অনুসরণ করা হবে।