ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হরিশংকরপুর গ্রামে কুপিয়ে ও গলা কেটে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলাপ হোসেন (৫৫) কে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত আলাপ হোসেন ওই গ্রামের ভোলা শেখের ছেলে। এছাড়া আহত হয়েছেন ওয়ার্ড আ’লীগের সভাপতি নুর ইসলাম।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আলাপ হোসেন কয়েকজন সঙ্গীসহ বিয়ের দাওয়াত খেয়ে নিকটস্থ বাদামতলা বাজারে যাচ্ছিলেন। তারা হরিশংকরপুর গ্রামের মিয়া বাড়ির মোড়ে পৌঁছালে সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা দুর্বৃত্তরা তাদের উপর হামলা চালায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে ও গলাকেটে আলাপ হোসেন ও নুর ইসলামকে গুরতর জখম করে। তাদেরকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আলাপ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের দলীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হরিশংকরপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফরিদ ও জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাসুম গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। বিয়ের দাওয়াত ও দুই গ্রুপের আধিপত্য বিস্তারের জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, নিহত আলাপ হোসেনের ভাইয়ের মেয়ের বিয়ের দাওয়াত খাওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদের সূত্রপাত। এরই জের ধরে হামলার ঘটনা ঘটে।
সাবেক চেয়ারমান ও হরিশংকরপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সভাপতি ফারুকুজ্জামান ফরিদ জানান, আলাপ হোসেন হরিশংকর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড আ’লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। আহত নুর ইসলাম একই ওয়ার্ডের সভাপতি।
তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান চেয়ারম্যান মাসুমের সমর্থক বল্টু ও তুফানের নেতৃত্বে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে।
বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল মাসুম জানান, আলাপ হোসেন এক সময় চরমপন্থী দল বিপ্লবী কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য ও ক্রসফায়ারে নিহত চরমপন্থী দলের আঞ্চলিক নেতা সামছুল ওরফে সামছেল এর ডান হাত ছিলেন। আলাপ হোসেন ও নুর ইসলাম বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন এবং সাবেক চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান ফরিদের সমর্থক। পরে সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদের সমর্থক হিসেবে আ’লীগের নেতা যান তারা।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, এ ঘটনার পর ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে বেশ কিছু বাড়িতে ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। খুনিদের আটক করতে অভিযান চলছে।