ডেস্ক রিপোর্ট, Prabartan | প্রকাশিতঃ ১৯:৩৯, ১৭-০৫-১৯
তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান সংরক্ষণের প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও শুক্রবার (১৭ মে) ‘বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস’ পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তবে দিবসটির আনুষ্ঠানিকতা পালন করা হবে শনিবার (১৮ মে)।
জাতিসংঘের অংগ সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের ন্যায় বাংলাদেশেও দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় ৫০তম বার্ষিকী উদযাপন করা হচ্ছে।
আইটিইউ এবছর দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছে- ‘ব্রিজিং দ্যা স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন গ্যাপ’। যার সহজ অর্থ হলো- তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান সংরক্ষণ অর্থাৎ যেভাবে যে পণ্য বা সেবার মান নির্ধারণ করা হয়েছে, তা সব স্থানে যেনো একই মানে ব্যবহার করা হয়।
বিশ্বায়নের এ যুগে তথ্যপ্রযুক্তি ও উন্নত টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন ও অগ্রগতির অন্যতম হাতিয়ার। তথ্যপ্রযুক্তির অভাবনীয় বিস্তার এ খাতের গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ভৌগোলিক সীমারেখা অতিক্রম করে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বিশ্ববাসীকে এক কাতারে শামিল করেছে। তাই তথ্যপ্রযুক্তি সেবার ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে একই পর্যায়ে থাকা, আন্তর্জাতিক বাজারে সহজে বিচরণ, উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগানো এ ধরনের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের জন্য টেলিযোগাযোগের একটি অভিন্ন স্ট্যান্ডার্ড থাকা দরকার। এ প্রেক্ষিতে এবারে দিবসটির প্রতিপাদ্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে।
যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটিকে পালন এবং প্রতিপাদ্যকে অর্থবহ করতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসি’র সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিকেশন উইং) জাকির হোসেন খাঁন।
শনিবার (১৮ মে) হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে দিবসটির মূল অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়ে মোবাইল অপারেটর রবি’র পক্ষ থেকে কি-নোট উপস্থাপন করা হবে। এছাড়া হুয়াউয়ে ও নোকিয়া ‘স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন অব ৫-জি’ এর ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং ইন্টারনেট প্রোভাইডার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ‘প্রসেপেক্টস অব আইএসপি ইন্ডাস্ট্রি ইন ৫-জি’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবে।
অন্যান্য অনুষ্ঠানমালার মধ্যে বিসিএস (টেলিকম) সমিতি টেলিটেক জার্নালের বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করছে এবং স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে অন-লাইন রচনা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সারাদেশে বিভিন্ন স্থানে এবং রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে দিবসের প্রতিপাদ্য তুলে ধরে সচেতনতামূলক ফেস্টুন ও ব্যানার প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাংলাদেশ বেতার, বিটিভিসহ বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠান প্রচার করা হচ্ছে। মোবাইলে এসএমএস প্রদান ও টিভি চ্যানেলে স্ত্রল প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে দিবস সম্পর্কে অবহিত করা হচ্ছে।
বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ, টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব অশোক কুমার বিশ্বাস, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব এনএম জিয়াউল আলম, বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক এবং আইটিইউ এর মহাসচিব হাওলিন ঝা বাণী প্রদান করেছেন।
সারা বিশ্বের জন্য আইটিইউ এর যে মানদণ্ডগুলো রয়েছে, সেগুলোই বিশ্বব্যাপী বাজার উন্মুক্তকরণ এবং তথ্যপ্রযুক্তিতে উদ্ভাবন ও বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। যা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করবে। সরকার আগামী ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যেই ৫-জি চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী উন্নত দেশগুলোতে ৫-জি আরও ব্যাপক অবকাঠামোসহ ব্যাপ্তি পাচ্ছে।
৫-জি মান এবং তা যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে মিলিত হয়, তবে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনগুলোর একটি নতুন আঙ্গিক পাবে। যার মাধ্যমে বর্তমান স্মার্টফোনের মতো আসবে স্বয়ংচালিত স্মার্ট গাড়ি, হতে পারে স্মার্ট শহর। আর গ্রাহক তা সাদরে গ্রহণ করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।