ঘূর্ণিঝড় ফণী: শরণখোলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত

ডেস্ক রিপোর্ট, Prabartan | প্রকাশিতঃ ১৩:০৫, ০৩-০৫-১৯

ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয় প্লাবিত হয়েছে। অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে গুরুত্বপূর্ণ মালামাল নিয়ে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন পার্শ্ববর্তী নিরাপদ স্থানে।

শুক্রবার (০৩ মে) সকাল থেকে বলেশ্বর নদীর পানি বাড়তে থাকে। স্রোতের চাপে উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৩৫/১ ফোল্ডারের বেড়িবাঁধ ভেঙে বগী, সাতঘর এলাকার লোকালয়ে পানি ঢুকে ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে।

অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে সন্তান-সন্ততি ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে পার্শ্ববর্তী এলাকায় অবস্থান নিয়েছেন। পরিস্থিতির অবনতি হলে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ারও প্রস্তুতি রয়েছে তাদের।

বগী গ্রামের বাসিন্দা রাজ্জাক তালুকদার বলেন, সিডরে মরেছে আত্মীয়-স্বজন। ফণীর কথা শুনেই আতঙ্কে আছি। আজ সকালে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকলয়ে পানি ঢুকেছে। খুব বিপদে আছি।

আতঙ্কের কথা জানিয়ে আবুল হাশেম নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থান করছি। বেড়িবাঁধ ভেঙে আমার বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। কি হবে জানি না। সন্তানদের আত্মীয় বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছি।

এদিকে জনগণের তুলনায় অপ্রতুল আশ্রয় কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করে জহির উদ্দিন বলেন, ফণী আঘাত হানলে আমরা কিভাবে বাঁচবো। আশ্রয়কেন্দ্রে এত লোক থাকবে কীভাবে?

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রিয়াদুল হোসেন পঞ্চায়েত বলেন, বেরিবাঁধটি আগে থেকেই ঝুঁকিপূর্ণ। সকালে জোয়ারের পানির চাপে ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়েছে। বেশকিছু ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে।

‘পানির চাপ বাড়লে আরও কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে বেড়িবাঁধের আশপাশের মানুষগুলো ঘর ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান নিতে শুরু করেছেন।’

তিনি বলেন, আমরা এর আগেও দাবি জানিয়েছিলাম মজবুত করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার। কিন্তু তা করা হয়নি। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিতে আমরা এখন অসহায় হয়ে পড়েছি।

সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান বলেন, বগী এলাকার বেড়িবাঁধের একটি অংশ ভেঙে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। লোকালয়ে পানি ঢুকছে।

তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, আশ্রয়কেন্দ্র ও স্বেচ্ছাসেবকরা প্রস্তুত রয়েছেন বলে জানান তিনি।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় ফণী আতঙ্কে মোংলা, রামপাল ও কচুয়ার মাছ চাষিরা ঘেরের পাশে নির্ঘুম রাত কাটিয়েছেন। আতঙ্কে ঝড়ের তোরে ঘেরের পাড় ভেঙে মাছ ভেসে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।

কচুয়া উপজেলার মনিরুল ইসলাম বলেন, মাছ চাষ করে জীবন চালাই। জলোচ্ছ্বাস হলে মাছ ভেসে যাবে। বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যাবে।

মোংলার মুকুন্দ বিশ্বাস বলেন, সিডরের ক্ষতি-ই এখনও পুষিয়ে উঠতে পারিনি।ঘরবাড়িসহ ঘেরও ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। এবার ঘরটা নিয়েও আমরা বেশ ভয়ে আছি।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদুজ্জামান খান বলেন, বেড়িবাঁধ ভাঙার খবর শুনেছি। আমরা খোঁজ নিচ্ছি। প্রকল্পের লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চেষ্টা করছি দ্রুত মেরামত করার।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top