ডেস্ক রিপোর্ট, Prabartan | প্রকাশিতঃ ১৬:২০, ২০-০৪-১৯
পরিবেশ রক্ষা করে ফ্যাশন শিল্পখাতে টেকসই উৎপাদনের তাগিদ দিয়েছেন এ খাতের বিশেষজ্ঞরা। এছাড়াও ফ্যাশন পণ্যের টেকসই ব্যবহারের প্রতিও গুরুত্বারোপ করেছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
শনিবার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে ফ্যাশন খাত নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তাদের কণ্ঠে ভেসে ওঠে এসব তাগিদ। ফ্যাশন রেভুল্যুশন এবং অ্যাকশন এইডের উদ্যোগে ‘ভয়সেস অ্যান্ড সল্যুশন: ফ্যাশন শিল্পে টেকসই উৎপাদন এবং ব্যবহারের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধি অর্জন’- শীর্ষক এ সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম।
এছাড়াও সেমিনারে বক্তব্য রাখেন জায়ান্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক হাসান, নিউ এজ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ ইব্রাহিম, অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিজিএমইএ পরিচালক শরীফ জহির এবং কিউটেক্স সল্যুশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তহুরা খানম। অ্যাকশন এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবিরের সঞ্চালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন ফ্যাশন রেভুল্যুশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর নওশীন খায়ের।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বিশ্বব্যাপী ফ্যাশন শিল্পের প্রায় তিন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার সমমূল্যের বাজার রয়েছে। তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। তবে এই ফ্যাশন খাতই আবার পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দূষণকারী খাত। ফ্যাশন খাত বিশ্বের ২০ শতাংশ বর্জ্য পানি এবং ১০ শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড নিঃসরণের জন্য দায়ী। একই সঙ্গে, তুলা চাষ ২০ শতাংশ কীটনাশক বস্তু এবং ১০ শতাংশ কীটনাশক উৎপাদনের জন্য দায়ী। এ খাতে মাত্র ১৫ শতাংশ বর্জ্য পুনরায় ব্যবহার করা যায়। ফলে ৮৫ শতাংশ বর্জ্যই প্রকৃতিতে ফেরত আসে বলেও জানান সংশ্লিষ্টরা।
নওশীন খায়ের তার প্রবন্ধে বলেন, জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন ইউএনএফসিসি এর মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে ফ্যাশন শিল্পের জন্য গ্রিনহাউজ গ্যাস এবং বর্জ্য নিঃসরণ বৃদ্ধি পাবে ৬০ শতাংশ। ২০৫০ সালের মধ্যে ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে প্রয়োজন হবে বর্তমানে বিদ্যমান প্রাকৃতিক সম্পদের তিনগুণ। তাই এ নেতিবাচক প্রভাব কমিয়ে আনতে টেকসই ফ্যাশন শিল্পের দিকে ধাবমান হওয়া জরুরি।
এছাড়াও ফ্যাশন শিল্পের কারণে বাংলাদেশ তার ভূগর্ভস্থ পানির পরিমাণ হারাচ্ছে বলেও জানানো হয় সেমিনারে। তবে পোশাক শিল্পের সামগ্রিক প্রভাব এবং স্থায়ী প্রক্রিয়ার ওপর ব্যাপক গবেষণা নেই বলে জানান বক্তারা। স্বচ্ছতা এবং গবেষণার মাধ্যমে আরো প্রমাণভিত্তিক তথ্যের প্রয়োজন বলে মত দেন আলোচকরা।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা যখন গার্মেন্টস ব্যবসা শুরু করছিলাম তখন আমাদের এ সম্পর্কে সচেতনার শিক্ষা কেউ দেয়নি। আমি যখন নিজেই ৯০’র দিকে কোনাবাড়িতে ডাইংয়ের ব্যবসা শুরু করি তখন কিন্তু কেউ আমাকে বলেনি এর পানি কোন দিক দিয়ে প্রবাহিত করবো।
মেয়র বলেন, আপনারা জানেন মিরপুর কালশী খালের কথা। আমরা গত ১০ দিনে ৬৫০ টন ময়লা সরিয়েছি, সেখানকার অবস্থা ভয়াবহ। আমরা এরইমধ্যে ডুবুরি নামিয়েছি ব্রিজের নিচের ময়লা পরিষ্কারের জন্য। তারা বলছে যে, তাদের আরও ৬ জন ডুবুরি দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আপাতত আমরা এ ময়লাগুলো ল্যান্ডফিল্ডে ফেলছি। কিছুদিন পর এ ল্যান্ডফিল্ডগুলোও আর পাওয়া যাবে না। এখন যেগুলো আছে সেগুলোও অনেক ব্যয়বহুল।
এ সময় তিনি বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সমীক্ষা করে করণীয় নির্ধারণে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।