ডেস্ক রিপোর্ট, Prabartan | প্রকাশিতঃ ১৭:০০, ১৪-০৪-১৯
চারদিকে লাল-সাদা পোশাকের সমাহার। ঢোল, ডুগডুগি বাজিয়ে পথে পথে বিপুল উচ্ছ্বাসে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ভেদাভেদ ভুলে নববর্ষকে বরণ করে নিয়েছে খুলনাবাসী।
বর্ষবরণ উপলক্ষে আয়োজিত খুলনার অনুষ্ঠান সমূহের মধ্যে ছিল মঙ্গল শোভাযাত্রা, বৈশাখী গান, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পান্তা উৎসব। জেলা প্রশাসন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে বর্ষবরণে এসব উদযাপন করা হয়েছে।
রোববার (১৪ এপ্রিল) সকালে খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর চত্বরের বকুলতলায় বৈশাখী গানের মধ্যদিয়ে বর্ষবরণের সূচনা করা হয়। পরে নগরের শিববাড়ি মোড়ে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান।
শোভাযাত্রাটি শিববাড়ি মোড় থেকে শুরু হয়ে নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে খুলনা অফিসার্স ক্লাবে এসে শেষ হয়।
শোভাযাত্রায় খুলনা সিটি করপোরেশনের (কেসিসি) মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, বিভাগীয় কমিশনার লোকমান হোসেন মিয়া, পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির, খুলনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন, পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ, বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন, সরকারি-বেসরকারি দফতরের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
সকাল সাড়ে সাতটায় নগরের জেলা প্রশাসকের বাংলোর বকুলতলায় অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পান্তা উৎসব।
খুলনা শিশু একাডেমি শিশুদের নিয়ে বর্ষবরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। খুলনা জেলা কারাগার ও শিশু পরিবার-৩ ঐতিহ্যবাহী বাঙালি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে এবং জেলা কারাগারের কয়েদিদের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।এছাড়া নগরের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্ব-স্ব ব্যবস্থাপনায় জাঁকজমকপূর্ণভাবে বর্ষবরণ উদযাপন করে। বিভাগীয় সরকারি গণগ্রন্থাগার কর্তৃপক্ষ শিশুদের রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
খুলনা জেলা পরিষদের উদ্যোগে সকাল সাড়ে ৮টায় পান্থা উৎসব এবং পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা জেলা পরিষদের সদস্যরা। বর্ষবরণে খুলনাবাসীকে চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে জেলা পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত পান্থা উৎসবের শুভ-সুচনা করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আছাদুজ্জামান।
খুলনা আওয়ামী লীগ নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে দলের মহানগর ও জেলা কমিটি সকাল ৮টায় দলীয় কার্যালয়ে হতে বর্ণাঢ্য র্যালির আয়োজন করে। র্যালি শেষে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা করা হয়। পরে সকাল সাড়ে ৯টায় সদর থানা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে পান্তা ইলিশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষ্যে সকাল ৮টায় এসো হে বৈশাখ সঙ্গীতের মাধ্যমে শুরু হয় মেলা। পরে সকাল সাড়ে ৮টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানের নেতৃতে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মেলা অঙ্গণ থেকে শুরু করে হাদী চত্বরে পৌঁছায়। সেখানে উপাচার্য বেলুন উড়িয়ে এ শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। পরে শোভাযাত্রাটি নগরের শিববাড়ী মোড় থেকে ময়লাপোতা মোড় হয়ে রয়্যাল চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় উপাচার্য ফায়েক উজ্জামান বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন।
শোভাযাত্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ, ডিন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত), ডিসিপ্লিন প্রধানরা, বিভাগীয় প্রধানরা, মেলা আয়োজক কমিটির সভাপতি আইন স্কুলের ডিন ও ডিসিপ্লিন প্রধান, কমিটির সদস্য-সচিব ছাত্রবিষয়ক পরিচালকসহ শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ নেন।
খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়ন (কেইউজে) বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে সকাল ৮টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বৈশাখী আপ্যায়নের আয়োজন করে।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখার উদ্যোগে বর্ষবরণ উপলক্ষ্যে সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে। পরে পিঠা উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বর্ষবরণ পর্ষদ খুলনার আয়োজনে ছিল সকাল সাড়ে ৭টায় শহীদ ডা. মিলন চত্বর থেকে শোভাযাত্রা, সকাল সাড়ে ৮টায় পান্তা উৎসব, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
খুলনা শিশু একাডেমির আয়োজনে একাডেমি চত্বরে শিশু আনন্দ মেলা, শিশু নাট্য উৎসব ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
এছাড়া বর্ষবরণ উপলক্ষে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), আযম খান সরকারি কমার্স কলেজ, খুলনা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি দৌলতপুর মুহসিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উদ্যোগে শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়েছে।
এদিকে বর্ষবরণ উপলক্ষে নগরের আব্বাস উদ্দিন একাডেমির আয়োজনে জাতিসংঘ পার্কে শুরু হয়েছে দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা।