‘মুদ্রাবাজার ও পুঁজিবাজার একে অপরের পরিপূরক’

ডেস্ক রিপোর্ট, Prabartan | আপডেট: ১৯:৪৫, ০৫-০৪-১৯

মুদ্রাবাজার ও পুঁজিবাজার একে অপরের পরিপূরক বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের উপদেষ্টা এস কে সুর চৌধুরী। তিনি বলেছেন, এক সময় ভুল ভাবা হতো। মনে করা হতো পূঁজিবাজারের সঙ্গে মুদ্রাবাজারের কোনো সম্পর্ক নেই।

তিনি বলেছেন, একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে পুঁজিবাজারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এই মুহুর্তে আর্থিক খাতের বেশিরভাগ অর্থ সরবরাহ করে ব্যাংক খাত। ব্যাংক নির্ভরতা কমাতে পুঁজিবাজার শক্তিশালী করার বিকল্প নেই।

আজ শুক্রবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে অর্থসূচক আয়োজিত ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০১৯ এর এক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি।

এস কে সুর চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজারকে শক্তিশালী করতে সরকার বা অন্য কোনো পক্ষ থেকে সুপারিশ না আসলেও আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। যার মাধ্যমে ব্যাংক থেকে পুঁজিবাজারের দিকে প্রবাহিত হবে। আশা করি পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন হলে তার ফলাফল পাবে জনগণ।

আমাদের দেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো স্বল্প মেয়াদী আমানত সংগ্রহ করে দীর্ঘমেয়াদী খাতে বিনিয়োগ করা। এই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। এই কারণেই মাঝে মাঝে তারল্য সংকট দেখা দেয়, যোগ করেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এ উপদেষ্টা বলেন, সরকারি উদ্যোগে একাটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে দেশের বন্ড মার্কেটের উন্নতি ঘটবে। অচিরেই এর ফলাফল পাওয়া যাবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউসিবি ক্যাপিটালের রাজিব কুমার। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের ব্যাংক সেক্টরে খেলাপির পরিমাণ ১১ শতাংশ। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে এর পরিমাণ খুবই কম। যেমন ভারত, পাকিস্তান, ভিয়েতনাম ও শ্রিলংকাতে যথাক্রমে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১০, ৮, ২ ও ৩ শতাংশ। একাটি দেশের আর্থিক উন্নয়নে খেলাপি ঋণ একাটি অন্যতম বাঁধা।

আইআইডিএফসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম সারওয়ার বলেন, বার্তমান অর্থনীতির প্রধান সমস্যা তারল্যে সংকট। এর ফলে দেশের ব্যাংক খাতের সুদের হারের পাশাপাশি অপারেটিং কস্ট বেড়ে যাচ্ছে। যার দায়ভার পড়ছে সাধারণ গ্রহীতাদের উপরে। ব্যাংক নির্ভরতা কমাতে ক্যাপিটাল মার্কেটের দিকে নজর দেওয়ার সময় এসেছে।

প্রাইম ব্যাংকের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক তবারক হোসেন ভূঁইয়া বিভন্ন গল্পের উদাহারণ দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ একটি অপার সম্ভবানাময় দেশ । কারণ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এদেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি সবচেয়ে গতিশীল।

শেয়ারবাজার বিনিয়োগকারিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আর্থিক উন্নতি হলেও আমাদের দেশে সচেতনতা, শিক্ষা ও দক্ষতার অভাব রয়েছে। সে করণে অনেক সময় বাজার উঠানাম করতে দেখা যায়। দক্ষ নাগরিক গড়ে তুলতে পারলে এসব সমস্যার সমাধান করা সহজ হবে বলে মনে করেন তিনি।

বিআইবিএমএর পরিচালক শাহ মো. আহসান বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ ব্যাংক একই ব্যবসায়ীদের নিয়ে কাজ করে। ব্যাংকভিত্তিক গ্রহীতাদরে মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সেকারণেই বড় ঋণ খেলাপির মতো সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে। তাই সেক্টরভিত্তিক ব্যাংকিং চালু করার পরামর্শ এই অর্থনীতিবিদের।

ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরফান আলী বলেন, আমরা যারা বিদেশিদের সাথে ব্যবসা করি তাদের জন্য মূলধন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একজন বড় গ্রাহক খেলাপিতে পরিণত হলে এর প্রভাব খুব বড়। তাই আমর এজেন্ট ব্যাংকিংকে ছড়িয়ে দিতে গ্রামে গঞ্জেও কাজ করছি। এক্ষেত্রে ছোট গ্রাহকরা খেলাপি হলেও ব্যাংকের উপর তেমন কোন প্রভাব পড়ে না।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top