ডেস্ক রিপোর্ট, Prabartan | আপডেট: ২১:১৭, ০৫-০৪-১৯
ইন্টারনেট রেভ্যুলেশনের পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে বড় চমকগুলোর মধ্যে একটি ফেসবুক। প্রতিষ্ঠার পর থেকে পুরো পৃথিবীব্যাপি ফেসবুক এক নতুন রেভ্যুলেশন শুরু করেছে। যা প্রতিনিয়ত পরিবর্তন করে যাচ্ছে মানুষের জীবনের ধারা। গুগলের পর সবচেয়ে বেশি মানুষ প্রতিনিয়তই ফেসবুক ব্যবহার করে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ফেসবুকও প্রতিনিয়তই নিত্য নতুন ফিচার যোগ করার মাধ্যমে ইন্টারনেটের ব্যবহার তথা যোগাযোগ মানুষের কাছে আরো সহজ করে তুলছে। তবে আমরা সকলেই কমবেশি ফেসবুক ব্যবহার করলেও আমারা অনেকেই ফেসবুক সম্পর্কে বেশি ধারণা রাখিনা। তাহলে জেনে নেয়া যাক এই সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট সম্পর্কে অজানা সব তথ্য-
১. ফেসবুক তৈরির পূর্বে মার্ক জুকারবার্গ তৈরি করেছিলেন ফেইসস্মাস। এর কাজ ছিল হাভার্ডের ছাত্রীদের দুইটি ছবি তুলনা করা এবং ভোটের মাধ্যমে কে বেশি হট তা যাচাই করা। ফেইসাস্মাসে মাত্র ৪ ঘন্টায়ই ৫০০ ভিজিটর হয় এবং ২২ হাজার ছবি আপ্লোড করা হয় । যা হাভার্ডের ডর্মেটরির সার্ভার ডাউন করে দিয়েছিল। ফেসস্মাস থেকেই জুকারবার্গ ফেসবুকের ধারণা পায়।
২. কখনো কি ভাবে দেখেছেন ফেসবুকের ইন্টারফেস নীল রং এর কেন? এর পিছনেও যথাযোগ্য কারণ রয়েছে। মার্ক জুকারবার্গ একজন বর্ণান্ধ। তিনি লাল এবং সবুজ রঙ্ দেখতে সক্ষম নয়। একারণে নীলই জুকারবার্কের কাছে সবচেয়ে গাঢ় রং। তাই তিনি ফেসবুকের ইউজার ইন্টারফেস নীল বানানোর সিদ্ধান্ত নেন।
৩. ফেসবুকের প্রথম ফেস বা মুখ ছিল বিখ্যাত মার্কিন অভিনেতা আল পাচিনোর। ফেসবুক চালু করার পর কোনো ইউজার ফেসবুকে একাউন্ট খুলতে গেলে একটা ইমেজের হেডার ফাইলে বাইনারি কোড দিয়ে একটি ছবি আসত। প্রথমে ঠিকমত বোঝা না গেলেও পরবর্তীতে ইউজাররা বুঝতে পারে এটি আল পাচিনোর ছবি।
৪. প্রতিষ্ঠার পর থেকেই টেক জায়ান্টরা ফেসবুক পুরোপুরি কেনার জন্য আগ্রহ দেখায়। ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠার পরই গুগল ফেসবুককে কিনে ফেলার জন্য আগ্রহ দেখাতে থাকে। তখন ফেসবুকের ভ্যালুয়েশন ধরা হয় ১৫ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু জুকারবার্গ গুগলের অফারে অনাগ্রহী ছিলেন। পরবর্তীতে গুগল ফেসবুকের বড় পরিমাণ শেয়ার ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যমে নিতে চায় কিন্তু ফেসবুক এতেও অস্বীকৃতি জানায়। ২০০৬ সালে ইয়াহুও ফেসবুককে ১ বিলিয়নে কিনে নেয়ার অফার দেয় কিন্তু জুকারবার্গ ‘না’ করে। অবশেষে মাইক্রোসফট ফেসবুকের ১ দশমিক ৬ শতাংশ শেয়ার ২৫০ মিলিয়ন ডলারে কিনতে সক্ষম হয়। মার্ক জুকারবার্গ ফেসবুকের মূল্য সম্পর্কে ভালই ধারণা রেখেছিলেন। একারণেই তিনি পৃথিবীর সবচেয়ে কম বয়সী বিলিয়নারে পরিণত হয়।
৫. যদি ফেসবুককে একটি দেশ ধরা হয় তবে ফেসবুক সকল দিক বিবেচনায় পৃথিবী পঞ্চম বৃহৎ দেশ হবে। এর পিছনের কারণ ফেসবুকের বিশাল ইউজার।
৬. ২০০৯ সালে ফেসবুক ব্রায়ান অকটন নামক এক প্রোগ্রামারের চাকরির আবেদন প্রত্যাখ্যান করে দেয়। যা ফেসবুকের সবচেয়ে বড় ভুল হিসেবে ধারণা করা হয়। কারণ ব্রায়ান ফেসবুক থেকে প্রত্যাখ্যান হওয়ার পরে হোয়াটসঅ্যাপ প্রতিষ্ঠা করে। পরবর্তীতে ১৯ বিলিয়ন ডলারে ফেসবুককে হোয়াটসঅ্যাপ কিনে নিতে হয়।
৭. ফেসবুকের প্রথম ইনভেস্টর বা অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টর ছিলেন মার্কিন বিজনেসম্যান পিটার থিয়েল। যে কিনা মাত্র ৫ লাখ ডলারে ফেসবুকের ১০ দশমিক ২ শতাংশ কিনে নেয় এবং ফেসবুকের বোর্ড অব ডিরেক্টরে স্থান করে নেয়।
৮. ফেসবুকের সবচেয়ে বড় আয়ের উৎস হলো বিজ্ঞাপন। এছাড়াও ফেসবুক পৃথিবীর সর্বোচ্চ অ্যাডভার্টাইসমেন্ট প্লাটফর্মও বটে। ফেসবুকে প্রতিনিয়ত প্রায় দুই মিলিয়ন বিজ্ঞাপনদাতা তাদের বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন।
৯. সিরিয়া, চায়না, ভিয়েতনাম, উত্তর কোরিয়া এবং ইরানে ফেসবুক নিষিদ্ধ। এছাড়াও ইংল্যান্ডের ক্যাথলিক চার্চও ফেসবুককে ডিপ্রেশনের কারণ হিসেবে বর্ননা করে ফেসবুকের ব্যবহার সীমিত করতে বলে।
১০. ফেইসবুক ২০০৭ সালে নিউজ ফিড যুক্ত করার পরে এন্ড্রু বসওর্থ এবং ফেসবুকের অন্যান্য ইঞ্জিনিয়াররা ফেসবুকে লাইকের পরিবর্তে ওসাম বাটন আনার জন্য পরামর্শ দেয়। কিন্তু মার্ক জুকারবার্গ এই আইডিয়া সাকচ করে দেয় এবং লাইক বাটনই নিয়ে আসে।