ভিপি নুরকে মারধর

ডেস্ক রিপোর্ট, Prabartan | আপডেট: ১৯:০৪, ০২-০৪-১৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে (এসএম) ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার বিকেলে এসএম হলে ছাত্রলীগ কর্মীরা তাকে মারধর করে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, মঙ্গলবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই হলে ভিপি নুর প্রবেশ করার পরপরই ছাত্রলীগ সভাপতি তাহসান হোসেন রাসেল ও সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান তাপসের নেতৃত্বে তাকে অবরুদ্ধ করা হয়। এসময় হল সংসদের অনুমতি না নিয়ে হলে প্রবেশ করায় নুরকে গালিগালাজ করেন হল সংসদের ভিপি কামাল হোসেন এবং জিএস জুলিয়াস সিজার। এক পর্যায়ে নুরের গায়ে হাত তোলেন কামাল। এছাড়াও নুরের সঙ্গে থাকা একজনকে মারধর করেছে ছাত্রলীগ কর্মীরা।

তারা নুরের কাছে হলে প্রবেশের কারণ জানতে চাইলে নুর বলেন, অভিযোগ নিয়ে হল প্রাধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে এসেছি। সোয়া ছয়টার দিকে হল প্রাধাক্ষ্য অধ্যাপক মাহবুবুল আলম জোয়ার্দার সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।

এদিকে এসএম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. ফরিদ হাসানকে সোমবার রাতে মারধরের ঘটনায় প্রতিবাদ জানাতে সোমবার বিকাল ৪টায় টিএসসির রাজু সন্ত্রাসবিরোধী ভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করা হয়। এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন ডাকসু ভিপি নুর। মানববন্ধন শেষে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে এই ঘটনার অভিযোগ জানাতে এসএম হলে প্রবেশ করেন তিনি।

এর আগে মানববন্ধনে ভিপি নুর যারা ফরিদ হাসানকে মেরে রক্তাক্তকারীদের আগামী ৩ দিনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর।

এদিন বিকেল সোয়া ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক মানববন্ধনে সংহতি জানাতে এসে তিনি এই দাবি জানান।

ফরিদ হাসানকে মারধরের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন। মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, এই সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে ৩ দিনের মধ্যে সিন্ডিকেট মিটিং ডেকে তাদের বহিষ্কার করতে হবে। যদি বহিষ্কার করা না হয় ৩দিন পর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা অনেক নির্যাতিত হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। অনেক লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু একটা অভিযোগের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এসময় তিনি রাজনৈতিক বিবেচনার পরিবর্তে মেধার ভিত্তিতে হলগুলোতে সিট বন্টনের দাবি জানান।

নুরুল হক নুর আরো বলেন, রাজনীতির পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কিছু সন্ত্রাসীদের পৃষ্ঠপোষকতা করে। বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত থাকা সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ছাত্ররা তাদের নিজেদের অধিকার খুঁজে নেওয়ার জন্য সোচ্চার হয়েছে। ছাত্রদের অধিকার যদি লঙ্ঘিত হয় তাহলে ছাত্রদের যা করার তারা তাই করবে।

মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন- ডাকসুতে স্বতন্ত্র জোট থেকে ভিপি পদে নির্বাচন করা অরণী সেমন্তি খান, ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি উম্মে হাবিবা বেনজির, কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ সাধারন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খাঁন, ফারুক হাসান প্রমুখ।

মানববন্ধন শেষে ক্যাম্পাসে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রক্টর অফিসের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখান থেকে হামলাকারীদের বহিষ্কার দাবিতে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।

এদিকে সোমবার দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ফরিদ হাসানকে পিটিয়ে হল থেকে বের করে দেন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তার কপালের ডান পাশ থেকে ডান কান পর্যন্ত ৩২টি সেলাই দেওয়া হয়েছে।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top