অনাস্থা থেকেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না

ডেস্ক রিপোর্ট, Prabartan | আপডেট: ১৮:১০, ৩১-০৩-১৯

জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কমিশার (ইসি) মাহবুব তালুকদার বলেছেন, অনাস্থা থেকেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না। যেসব কারণে আমরা ভোটারদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছি, সেসবের কারণ খুঁজে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ একান্ত আবশ্যক।

নির্বাচন ভবনের নিজস্ব কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে লিখিত বক্তব্যে রোববার (৩১ মার্চ) তিনি এমন মন্তব্য করেন।

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘নির্বাচন বিষয়ে অনাস্থা থেকেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না। যেসব কারণে আমরা ভোটারদের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছি, সেসবের কারণ খুঁজে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ একান্ত আবশ্যক। এমতাবস্থায় ভোটারদের উপর এ দায় চাপানো ঠিক নয়। বিগত দুই বছরে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের আত্মসমালোচনা প্রয়োজন। ওই সব নির্বাচনে যেসব ভুলভ্রান্তি হয়েছে, সেগুলো পুনরাবৃত্তি রোধ করা দরকার।’

‘উপজেলা নির্বাচন পরিষদের চতুর্থ ধাপের নির্বাচন সম্পন্ন হলো। স্থানীয় সরকার হিসেবে ঘোষিত উপজেলা পরিষদে স্বায়ত্বশাসন নেই। সংসদ সদস্যদের আওতা থেকে উপজেলা পরিষদকে মুক্ত করা না হলে উপজেলা নির্বাচন কোনোক্রমেই সুষ্ঠু, স্বাভাবিক ও ত্রুটিমুক্ত হওয়া সম্ভব না। তবে এটি নিতান্তই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বিষয়।’

মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘অনেকের মতে উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচন কমিশন ঘুরে দাঁড়িয়েছে। প্রশ্ন জাগে, কতদূর যাওয়ার পর এই ঘুরে দাঁড়াবার বোধদয় ঘটলো? উপজেলা নির্বাচনে বিভিন্ন কেন্দ্র বন্ধ করা এবং অনিয়মের জন্য পুলিশ ও অন্যান্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের সময় এহেন তৎপরতা দেখা যায়নি কেনো? এই জিজ্ঞাসার জবাব খুঁজলে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রকৃত স্বরূপটি উদঘাটিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন বা ভোটদানে জনগণের যে অনীহা পরিলক্ষিত হচ্ছে, তাতে জাতি এক গভীর খাদের দিকে অগ্রসরমান। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই নির্বাচন। নির্বাচনবিমুখিতা গণতন্ত্রের প্রতি মুখ ফিরিয়ে নেওয়ার নামান্তর। আমরা গণতন্ত্রের শোকযাত্রায় সামিল হতে চাই না। রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদদের বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে ভেবে দেখা প্রয়োজন।’

সাবেক এ সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি আবার বলি, জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচন সর্বোতভাবে নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত করা প্রয়োজন। রিমোট কন্ট্রোলে নির্বাচনকে কন্ট্রোল করা হলে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা বিপর্যয়ের মধ্যে পড়বে- যা গণতন্ত্রের জন্য অনভিপ্রেত। এ জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত একান্ত অপরিহার্য। সবার জন্য সমান সুযোগ রেখে নির্বাচনী ব্যবস্থাপনার সংস্কার ও বাস্তবায়ন করে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অবাধ নির্বাচন হলে রাজনৈতিক দল ও ভোটারদের অনীহা অবশ্যই দূরীভূত হবে।’

রোববার (৩১ মার্চ) পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চতুর্থ ধাপের ১০৭ উপজেলায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এ নির্বাচনে অনিয়মের কারণে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ভোট অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছে ইসি।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top