বিদেশি চ্যানেলে দেশি বিজ্ঞাপন বন্ধ ১ এপ্রিল থেকে

ডেস্ক রিপোর্ট, Prabartan | আপডেট: ২০:২৯, ৩০-০৩-১৯

বিদেশি চ্যানেলে দেশি বিজ্ঞাপন বন্ধের আইন ১ এপ্রিল থেকে বাস্তবায়ন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

শনিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে ব্রডকাস্ট জার্নালিস্ট সেন্টার (সম্প্রচার সাংবাদিক কেন্দ্র) আয়োজিত সংকটে বেসরকারি টেলিভিশন শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বিদেশি চ্যানেলে দেশি বিজ্ঞাপন বন্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে রয়েছে। আমার সবাইকে একাধিকবার নোটিশ দিয়েছি এবং রোববারও (৩১ মার্চ) একটি নোটিশ দেওয়া হবে। এরপর ১ এপ্রিল থেকে কেউ যদি বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রচার করে তবে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের অন্যতম সমস্যা চ্যানেল বেড়েছে বিজ্ঞাপন বাজার ছোট হয়েছে। এটি গত কয়েক বছরে হয়েছে। অনেকে আবার প্রতিযোগিতার জন্য বিজ্ঞাপন রেটও কমিয়ে দিয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, শুধু এটা নয় অনলাইনে ব্যাপক বিজ্ঞাপন চলে গেছে। ফেসবুক, টুইটার, অনলাইন পত্রিকাগুলোতেও ব্যাপক বিজ্ঞাপন যাচ্ছে যার এটিও একটি কারণ।

হাছান মাহমুদ বলেন, এই সংকট থেকে উত্তোরণের বড় ভূমিকা ক্যাবল অপারেটদের। বিদেশি বিজ্ঞাপন না দেখানোর শর্তেই তারা অনুমোদন নিয়েছে। বিদেশি অনেক চ্যানেল বাংলাদেশে জনপ্রিয়। মাল্টি লেভেল কোম্পানিগুলো তাদের প্রচারের স্বার্থে বিদেশি চ্যানেলগুলোকে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। আর এই বিজ্ঞাপনগুলো বন্ধ হয়ে গেলে ৩০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা আয় বাড়বে। আর এই আয় থেকে সংকট উত্তোরণ সম্ভব।

মন্ত্রী বলেন, একটি টিভি চ্যানেল করতে ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকা লাগে। টিভি মালিকরা লাভ করার মানসিকতা নিয়ে সবাই এসেছেন তা নয়। তবে এটার মাধ্যমে খরচটা উঠে আসুক এটাই তারা চান। তাই এই শিল্পটাকে বাঁচানোর স্বার্থে সবাই সহযোগিতা করবেন।

ক্যাবল অপারেটরদের উদ্দেশে তিনি বলেন, টিভি থেকে ৩ কোটি রেভিনিউ আসে। কিছুটা শেয়ার হলে টিভি চ্যানেলগুলো টিকে থাকবে এবং সাংবাদিকদের চাকরির ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

মন্ত্রী বলেন, সবার জন্য একটি চ্যালেঞ্জ এসেছে আইপি টিভি। সেটির কোনো লাইসেন্স দেওয়া হয়নি। আমি বিষয়টিকে তদন্ত করতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যানকে বলেছি, তারা জানাবে।

তিনি বলেন, কেউ ৩০ কোটি টাকা খরচ করে চ্যানেল করবেন আর কেউ ১০ লাখ টাকায় চ্যানেল চালু করে দেবেন এটা ঠিক না। আমরা এটির অনুমোদন দেব না তা নয়, এর জন্য নীতিমালা প্রয়োজন। আর নীতিমালা প্রনয়ণে ইতোমধ্যে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের এই শিল্পটাকে সুরক্ষা দিতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সেক্ষেত্রে মুনাফায় একটু ছাড় দিয়ে হলেও সবাইকে যৌথ্যভাবে কাজ করতে হবে।

অনুষ্ঠানে চ্যানেল টুয়েন্টিফোরের ব্যবস্থাপনা পরিচালকে এ কে আজাদ বলেন, সামনের চিত্র ভয়াবহ। রেভিনিউ কমে আসছে কিভাবে ওভারহেট কমানো যায় এগুলো নিয়ে সবাইকে ভাবতে হচ্ছে। কারণ ব্যাক্তির স্বার্থের চেয়ে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ বড়। তিনি বলেন, বিদেশি চ্যানেলে আমাদের বিজ্ঞাপনগুলো যেভাবে প্রচার হচ্ছে এটি বন্ধে সোচ্ছার হতে হবে। একই সঙ্গে আমাদের সাংবাদিকদের দক্ষতা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রত্যেক চ্যানেলে শক্তিশালি ইউনিট গড়ে উঠুক বলে তিনি মনে করেন।

অনুষ্ঠানে টিভি চ্যানেল ডিবিসির চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, বিদেশি চ্যানেলে বিজ্ঞাপন বন্ধ হলে বাজারে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকা যোগ হবে। এটি সংকট সমাধানে কাজে আসবে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গাজী টিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা।

সংগঠনটির আহ্বায়ক রেজওয়ানুল হক রাজার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের এমডি এ কে আজাদ,  সাবেক তথ্য কমিশনার গোলাম রহমান, স্কাইপি ক্যাবলের চেয়ারম্যান নূরুল আলম, চ্যানেল নাইনের সিইও নূরুল ইসলাম, খসরু সংগঠনের ট্রাস্টি সদস্য নূর জুলহাস ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক আক্তার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সদস্য সচিব শাকিল আহমেদ।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top