মাথা-হাত-পা বিচ্ছিন্ন অজ্ঞাত যুবককের মিলেছে পরিচয়

ডেস্ক রিপোর্ট, prabartan | প্রকাশিত: ১৫:৫৯, ০৮- ০৩-১৯

খুলনা মহানগরীর ফারাজিপাড়া এলাকা থেকে উদ্ধার হওয়া খন্ডিত লাশের পরিচয় মিলেছে।

লাশটি সাতক্ষীরার সদর উপজেলার ওমরাপাড়া গ্রামের আব্দুল হামিদ সরদারের ছেলে হাবিবুর রহমান সবুজের (২৬)। তিনি শুক্রবার সকালে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে লাশটি নিজের পুত্রের বলে সনাক্ত করেন। পিতা আব্দুল হামিদ সরদারের বরাত দিয়ে আমাদের সাতক্ষীরা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বেড়ানোর কথা বলে নিজের মোটর সাইকেলে খুলনায় গিয়েছিল সাতক্ষীরার হাবিবুর রহমান সবুজ (২৬) । তিন দিন পর তার বস্তাবন্দী খন্ডিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার সকালে সবুজের ফোন থেকে তাদের বাড়িতে একটি কল আসে। ফোনের ওই প্রান্ত থেকে বলা হয় ‘সবুজকে আমরা বেঁধে রেখেছি। ছয় লাখ টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেয়া হবে’। পুলিশ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।

নিহতের পিতা আব্দুল হামিদ সরদার জানান, সবুজ ঢাকায় লেখাপড়া করে। কয়েকদিন আগে ক্যান্সার আক্রান্ত মা জাহানারা খাতুনকে দেখতে বাড়ি এসেছিল সে। মঙ্গলবার সকালে তার মাকে জানিয়ে নিজের মোটর সাইকেলে খুলনায় যায় সবুজ। পরদিন ফিরে আসার কথাও বলেছিল সে। বৃহস্পতিবার তার খোঁজ জানতে খুলনায় ফোন করা হলে সাদি নামের এক ব্যক্তি ফোনটি রিসিভ করে জানায় ‘সবুজ মোস্তফা মামার সাথে যশোর গেছে’। এর পর থেকে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ফিরে না আসায় তিনি সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি জিডি করেন (যার নম্বর ২৯৩, তারিখ ০৭.০৮.১৯)। তার ছেলের সাথে খুলনায় ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল। এ নিয়ে তার বিরুদ্ধে একটি মামলাও হয়। এই মামলায় কিছুদিন আগে তার ছেলে জেলও খেটেছিল। তিনি অভিযোগ করেন, ব্যবসার টাকা লেনদেনকে কেন্দ্র করে তাকে খুলনায় কৌশলে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে ।

সাতক্ষীরা সদর থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান প্রবর্তনকে জানান, সবুজের লাশ নিতে খুলনায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপি) ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার সরদার রকিবুল ইসলাম বলেছেন, খন্ডিত আকারে উদ্ধার লাশটি ব্যক্তির নাম হাবিবুর রহমান (২৬) এর। তার বাড়ি সাতক্ষীরা সদরের উমরা পাড়ায়। বাবার নাম আব্দুল হামিদ। তিনি ইট ভাটায় শ্রমিক প্রদানের ঠিকাদারী সরদার হিসেবে কাজ করবেন। মার্চের ৫ তারিখ তিনি খুলনায় আসেন।

তিনি বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে অজ্ঞাত ব্যক্তির পরিচয় সনাক্ত করা হয়েছে। নিহত হাবিবুরে পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। তারা এলে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। মামলা দিলে মামলা নেওয়া হবে। কে বা কারা যুবককে হত্যার পর মরদেহটি ফেলে গিয়েছে তার তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত শাখা (সিআইডি), খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানা এবং গোয়েন্দা পুলিশ বলে জানান ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কমিশনার।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মহানগরীর শের-এ বাংলা রোডের বলাকা ক্লাবের বিপরীতে ড্রেনের পাশ থেকে পলিথিন মোড়ানো অবস্থায় অজ্ঞাত যুবকের মৃতদেহের একটি বড় অংশ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে মাথা, দুই পা ও দুই হাত ছিল না। পরে দুপুরে ফারাজিপাড়াস্থ সমাজসেবা অফিস সংলগ্ন ড্রেন থেকে আরও দু’টি ব্যাগে থাকা মাথাসহ অন্যান্য অংশ উদ্ধার করা হয়। মরদেহ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এদিকে, লোমহর্ষক এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নগরজুড়ে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এ ধরনের নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনা খুলনায় ঘটেনি।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top