ডেস্ক রিপোর্ট, Prabartan | আপডেট: ২১:৪৩, ১৭-০২-১৯
বিশ্বের ৩৯ শতাংশ মানুষের হাতে এখন স্মার্টফোন আছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষের হাতে আছে স্মার্টফোন। ফলে গ্রামীণ ও দরিদ্র এলাকাগুলোতে স্মার্টফোন এখন স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। স্মার্টফোন প্রযুক্তিতে সম্প্রতি বেশকিছু বড় ধরনের উন্নতি ঘটেছে। মোবাইল ফোন এখন কিছু জটিল রোগ, যেমন দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা থেকে শুরু করে মেলানোমা ও ম্যালেরিয়া নির্ণয়ও করতে পারে।
চোখের ডাক্তারের চেম্বারে গেলে সহজেই বোঝা যায়, দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষায় কী বিশাল বিশাল আকারের মূল্যবান যন্ত্রপাতি এ কাজে ব্যবহার করতে হয়। বেশ কয়েক বছর ধরে সেসব জায়গায় বিকল্প হিসেবে স্মার্টফোন ব্যবহার করে পরীক্ষা চালাচ্ছেন গবেষকরা।
বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন, স্মার্টফোনের ক্যামেরার সঙ্গে কিছু বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষের চোখের পেছন দিকের ছবিও তোলা সম্ভব।
সম্প্রতি জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু ক্লিনিকের সহযোগিতায় ভারতের ব্যাঙ্গালোরে শংকর আই সেন্টার একটি পাইলট প্রকল্প চালু করে। ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন এমন ২০০ রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়। এই রোগের চিকিৎসা না হলে অন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিও থাকে। স্মার্টফোন দিয়ে পরীক্ষা চালিয়ে প্রতি পাঁচজনে একজনের মধ্যে এই রোগ সফলভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
স্মার্টফোন ক্যামেরায় এজন্য যে বিশেষ প্রযুক্তি দরকার হয়, সাধারণত তার দাম কয়েকশ ইউরো পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু ভারতের বিজ্ঞানীরা শুধু একটি এইডি বাতি, একটি ব্যাটারি ও অ্যাডহেসিভ টেপ ব্যবহার করে একই প্রযুক্তি তৈরি করেছেন, যার বাজারমূল্য এক ইউরোর চেয়েও কম।
স্মার্টফোন ক্যামেরা দিয়ে রেকর্ড করা চোখের অবস্থার ভিডিওর মান অন্যান্য প্রযুক্তির মতো এত ভালো না হলেও, এটি সহজলভ্য, দামে কম এবং এতে কাজটি ঠিকমতোই হয়।
আফ্রিকার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে মোবাইল ক্যামেরা দিয়ে এখন ম্যালেরিয়াসহ অন্যান্য সংক্রামক রোগ শনাক্ত করছেন ডাক্তাররা।
গবেষকদের মতে, অণুবীক্ষণের মতো কাজ করতে পারে, এমন প্রায় সবকিছুই রয়েছে একটি মোবাইল ক্যামেরার মধ্যে। মোবাইলের লেন্স ও ক্যামেরা সেন্সর ঠিক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের মতো করেই সাজানো রয়েছে, দরকার কেবল আকার বড় করার প্রযুক্তি এবং পর্যাপ্ত আলো।
এ সমস্যার সমাধানে এখন বাজারে চলে এসেছে কিছু বহনযোগ্য ছোট আকারের থ্রিডি প্রিন্ট করার উপযোগী ক্লিপ। এসব ক্লিপ মোবাইল ক্যামেরার সাথে যুক্ত করে খুব সহজেই তোলা যাচ্ছে হাই-ডেফিনিশন ছবি। স্মার্টফোনের সোনার প্রযুক্তি ব্যবহার করে মাদকাশক্তি নিরাময়ের পথও খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
নিদ্রাহীনতার সমাধানে ব্যবহার করা কিছু মোবাইল অ্যাপের সাফল্যে উদ্বুদ্ধ হয়ে ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা সেকেন্ড চান্স নামে একটি অ্যাপ তৈরি করেছেন। এই অ্যাপ এক মিটার দূর থেকেও মানুষের নিঃশ্বাসের প্যাটার্ন নির্ধারণ করতে পারে।
মানুষের শ্রবণ-ক্ষমতার বাইরে, এমন সোনার সাউন্ড নির্গমণ করে এই অ্যাপ। নিঃশ্বাস যদি উদ্বিগ্ন হওয়ার পর্যায়ে ধীর গতির হয়ে পড়ে, তখন এই অ্যাপে অ্যালার্ম বেজে ওঠে৷ তা-ও যদি ব্যবহারকারীর সাড়া পাওয়া না যায়, নিজে থেকেই কল চলে যায় হাসপাতাল বা পুলিশের জরুরি নম্বরে।