ডেস্ক রিপোর্ট, Prabartan | আপডেট: ৬:৫৫ পিএম, ২৯-০১-১৯
বাংলাদেশসহ এশিয়া জুড়ে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে অগ্রাধিকার দিচ্ছে এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি)।
এআইআইবি বলছে, বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে অবকাঠামো ব্যয় বাড়লেও প্রবৃদ্ধি অর্জিত হবে। মুদ্রাস্ফীতি ও সম্ভাব্য মুদ্রার মান হ্রাস নিয়ে অবকাঠামো খাতের অংশিদারদের উদ্বেগ সত্ত্বেও দেশটিতে বাজার ক্রম সম্প্রসারণশীল। বাজার অনিশ্চয়তা এবং স্বল্পমেয়াদী চ্যালেঞ্জ থাকলেও দেশটির অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।
অবকাঠামো ব্যয় বাড়লেও বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি হবে: এআইআইবি
প্রতিষ্ঠানটির ‘এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফিন্যান্স ২০১৯: ব্রিজিং বর্ডার, ইনফ্রাস্ট্রাকচার টু কানেক্ট এশিয়া অ্যান্ড বিয়ন্ড’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। মঙ্গলবার এআইআইবি’র সিনিয়র কমিউনিকেশন অফিসার লিন্ডসে ম্যাক (মিডিয়া কন্ট্যাক্ট) প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুসারে, বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে আগামী ১২ মাসে প্রতিযোগিতামূলক দেশিয় অর্থায়ন পরিবেশের কারণে অবকাঠামোগত ঋণ ব্যয় হ্রাস পাবে। এতে দীর্ঘমেয়াদী ঋণগ্রহীতা বৃদ্ধি পাওয়াসহ আর্থিক খাত শক্তিশালী হওয়ার কারণে ঋণ প্রদানের হার কমে যাওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
এতে আরো বলা হয়, বাংলাদেশে মুদ্রা অস্থিতিশীলতায় প্রকল্প অর্থায়ন প্রভাবিত হতে পারে। যদিও বহুমুখী উন্নয়ন ব্যাংকগুলো যেকোনো প্রতিবন্ধকতা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সক্ষম বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এআইআইবি’র পলিসি অ্যান্ড স্ট্রাটেজি বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট জোয়াচিম ভন আমসবার্গ বলেন, বাংলাদেশ একটি দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি এবং বিদ্যমান অর্থনৈতিক উন্নয়ন ধারায় অবকাঠামো খাতের ঘাটতি মোকাবিলার এখনই সুযোগ।
তিনি আরো বলেন, আমরা আর্থিকভাবে ফলপ্রসু এবং উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রভাব রাখতে সক্ষম অবকাঠামোগত প্রকল্প চিহ্নিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকার ও অন্যান্য অংশিদারদের সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে অঙ্গীকারবদ্ধ।
আরো পড়ুন>>: দুর্নীতিতে বাংলাদেশের ৪ ধাপ অবনতি: টিআই
আরো পড়ুন>>: ১৬ হাজার কোটি টাকার ৯ প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
আরো পড়ুন>>: হাসপাতালের অনিয়মের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে হামলার শিকার দুই সাংবাদিক
এআইআইবি বর্তমানে পরিবহন, জ্বালানি, এবং পানি উন্নয়ন খাতে বেশ কয়েকটি প্রকল্প পর্যলোচনা করছে। এসব প্রকল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য দুটি হচ্ছে, ময়মনসিংহ কেওয়াটখালি ব্রিজ প্রকল্প এবং সিলেট-তামাবিল সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প। এআইআইবি বোর্ড অব ডিরেক্টরস এখন পর্যন্ত জ্বালানি খাতের তিনটি প্রকল্পের জন্য ২৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করেছে।
সরকার ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বৃহত্তর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও অবকাঠামোগত প্রকল্প বাস্তবায়নে বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছে। সদস্যদের অবকাঠামোগত উন্নয়নে স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তার জন্য এআইআইবি কৌশল প্রণয়ন করছে।
এআইআইবি এর প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জ্যাং পিং থিয়া বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে। দেশটিতে নির্মাণ ব্যয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে উন্নতি বেসরকারি খাতের বিনিয়োগকে ভবিষ্যতে আরো ত্বরান্বিত করবে।
এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফিন্যান্স রিপোর্টের ফিচারগুলো বিভিন্ন খাতের ৪০ জন বিশেষজ্ঞ লেখক লিখেছেন। লেখকরা সবাই ব্যাংকিং, প্রকল্প ও অবকাঠামো, আর্থিক সেবা, বহুমুখী উন্নয়ন ব্যাংক, জ্বালানি ও পরিবহন খাতের বিশেষজ্ঞ।
রিপোর্টে অবকাঠামোর আর্থিক পরিধি ও এর ব্যয় এবং সড়ক নির্মাণ খরচ- এই তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব সহকারে দেখানো হয়েছে। এর আলোকে বাংলাদেশ, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, ফিলিপাইন, রাশিয়া ও তুরস্কের মতো দেশগুলোতে প্রকল্প অর্থায়নের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়েছে।
এআইআইবি একটি বহুমুখী উন্নয়ন ব্যাংক। ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয় চীনের বেইজিং এ অবস্থিত। ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু করা ব্যাংকটির বিশ্বব্যাপী বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৯৩। এশিয়া অঞ্চলের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের উদ্দেশ্যে কাজ করছে ব্যাংকটি। এছাড়াও এ অঞ্চলে টেকসই উন্নয়ন অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে জীবনমান উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান তৈরি লক্ষ্যেও কাজ করে এআইআইবি।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫, ২৯ জানুয়ারি ২০১৯
ডেস্ক/এএস