ডেস্ক রিপোর্ট : ২৭ বন্দিকে নির্মমভাবে গুলি চালিয়ে হত্যার দায়ে শ্রীলংকার এক শীর্ষ কারা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত।বুধবার রাজধানী কলম্বোর হাইকোর্ট এমিল লামাহেওয়াজ নামে সাবেক ওই কারা কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করে সর্বোচ্চ সাজা ঘোষণা করেন।
২০১২ সালের নভেম্বরে ২৭ বন্দিকে হত্যার দায়ে কারা কমিশনার এমিল লামাহেওয়াজকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন কলম্বো হাইকোর্ট। তবে তার সেই সময়ের সহযোগী পুলিশ কমান্ডো মোসেস রাঙ্গাজিওয়াকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।রাজধানী কলম্বোতে অবস্থিত শ্রীলংকার প্রধান কারাগার ওয়েলিকাদায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২০১৯ সালের জুলাইয়ে ওই দুই কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়।সেই সময় কারাগারে ২৭ জনকে গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। কিন্তু মাত্র আটজনকে হত্যার প্রমাণ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন : ‘তীব্র ঠাণ্ডায় প্রেমিকা তার প্রেমিকের বাড়ির উঠানে বসেছিল’
পুলিশ কমান্ডোরা ওয়েলিকাদা কারাগারে পৌঁছে দাঙ্গার অবসান এবং বন্দিদের নিরস্ত্র করেন। সেই সময় অভিযোগ করা হয়, বন্দিরা কারারক্ষীদের কাছ থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে গুলি চালিয়েছিল।দেশটির সরকারি আইনজীবীর মতে, আটজন বন্দিকে নাম ধরে ডেকে নিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মতো তাদের গুলি চালিয়ে হত্যা করা হয়। অন্য বন্দিদেরও একইভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়।
আদালতের নথিপত্র অনুযায়ী, অস্ত্রশস্ত্র এমনভাবে রাখা হয়েছিল যে, যাতে মনে হয়েছিল নিহত বন্দিরা অস্ত্র ছিনিয়ে কারারক্ষীদের গুলি চালিয়েছিলেন। তবে কে এই হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিয়েছিলেন তা উল্লেখ করা হয়নি।সেই সময় কারাগারের এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশটির তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষের নেতৃত্বাধীন সরকার ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে।
দেশটিতে তামিল বিদ্রোহীদের ৩৭ বছরের দীর্ঘযুদ্ধের অবসান ঘটে ২০০৯ সালে। তামিল বিদ্রোহীদের দমনের অভিযানে ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে। তার নিন্দায় সরব হয়েছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা।শ্রীলংকার জাতীয় জাদুঘর এবং একটি মন্দিরে ডাকাতির ঘটনায় নিহত বন্দিদের কয়েকজনকে আটক করা হয়েছিল।১৯৮৩ সালের জুলাইয়ে কারাগারে এক দাঙ্গায় ৫০ বন্দিকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পর ২০১২ সালের ওই গণহত্যা ছিল এই দ্বীপরাষ্ট্রের সবচেয়ে ভয়াবহ কারা সহিংসতা।