‘অটিস্টিক শিশুর জন্মে মা-বাবা দায়ী নন’

ডেস্ক রিপোর্ট, Prabartan | আপডেট: ১৮:৩৯, ০২-০৪-১৯

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একটা শিশু যখন জন্ম নেয় তখন সে যে অটিস্টিক হবে, প্রতিবন্ধী হবে তা ওইভাবে জানা থাকে না। এই ধরনের শিশু জন্মদানের জন্য মা-ও দায়ী থাকে না, বাবা-ও দায়ী থাকে না। কেউ-ই কিন্তু দায়ী থাকে না। সাধারণ মানুষের মতো না হওয়া এটা আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছা।

বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মঙ্গলবার (০২ এপ্রিল) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় দেখি, বাবা-মা, বিশেষ করে মায়ের ওপর অনেক দোষারোপ করা হয়। আশাকরি ভবিষ্যতে কেউ আর মাকে অযথা দোষারোপ করবেন না। এটা মায়েরও কষ্ট।

`আল্লাহ একটা মানুষকে এভাবে তৈরি করেছেন- তাকে তো অবহেলা করা কোনো সুস্থ মানুষের কাজ না। আমরা মানবতার কথা বলি, মানবাধিকারের কথা বলি, অনেক কিছু বলি কিন্তু এই মানুষগুলোর প্রতি আমাদের আরো সহানুভুতিশীল হওয়া উচিৎ। আরো দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ। ছোট্ট বেলা থেকে আমরা শিখেছি কানাকে কানা বলিও না, খোঁড়াকে খোঁড়া বলিও না। সেই শিক্ষা স্কুলেও দেয়া উচিৎ।’

শেখ হাসিনা বলেন, এখন মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি হচ্ছে। আগে যেমন এ ধরনের বাচ্চা হলে অনেকে লুকিয়ে রাখতো এখন আর লুকিয়ে রাখে না। এটাই আমাদের সমাজে খুব বেশি প্রয়োজন। তারপরও এদের দেখাশোনা করা বেশ কষ্টকর। সবাই সহানুভুতিশীল হবেন এটাই প্রত্যাশা।

‘মানুষ যেন কখনও এটা ভাবে যে অটিজম প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা। বরং আমরা মনে করি তাদেরও অধিকার আছে। সেই অধিকার আমাদের সুরক্ষিত করতে হবে। যারা সুস্থ ব্যক্তি তাদের উপরই এ দায়িত্ব বর্তায়।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, অটিজম আক্রান্তদের মধ্যে অনেক সুপ্ত ট্যালেন্ট থাকে, সেগুলো আমাদের কাজে লাগানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। এ বিষয়ে ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করে দিয়েছি। বিত্তশালীদের ট্রাস্ট ফান্ডে অনুদান দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

এ সময় বিত্তশালীদের প্রতিবন্ধী ও অটিজম আক্রান্তদের পাশে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, আগামীতে প্রতি জেলায় জেলায় অটিজম পরিচর্যা কেন্দ্র করে দেয়া হবে। একটা শিশু অটিস্টিক, কী কী লক্ষণ দেখলে বোঝা যাবে সেটা জানার পাশাপাশি তাদের সঙ্গে কীভাবে আচরণ করতে হবে, কিভাবে কথা বলতে হবে। কী কাজ করলে সে আরো সুস্থতার দিকে যাবে। এর উপর একটা ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন।

‘এজন্য আমরা সায়মা ওয়াজেদ হোসেনকে দিয়ে একটা সূচনা ফাউন্ডেশন তৈরি করেছি। সেই ফাউন্ডেশনে আমি নিজেও কিছু অনুদান দিয়েছি, অনেকে সেখানে অনুদান দিয়েছেন।’

অনুষ্ঠানে পান করতে দেয়া বোতলজাত ‘মুক্তা’ পানির বোতল দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তা পানি কিন্তু অটিজম আক্রান্তরা এবং প্রতিবন্ধীরা তৈরি করে। এটি উন্নতমানের। আমি আমার অফিসে এই পানি দিতে বলি। আমার জন্য এই পানি দেয়া হয়।

মুক্তা পানি বাজারজাতকরণে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিকতার অভাব রয়েছে উল্লেখ করে বাজারজাত জোরদার করার নির্দেশনা দেন তিনি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। বক্তব্য দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। উপস্থিত ছিলেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন।

অনুষ্ঠানে ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top