রাত যতো বাড়ছে দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি

ডেস্ক রিপোর্ট, Prabartan | আপডেট: ২১:৩৩, ২৮-০৩-১৯

পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টার কেমিক্যাল গোডাউনে আগুনের রেশ কাটতে না কাটতে আবারও ঘটলো ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। এবার রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীর এফ আর টাওয়ারে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটের দিকে আগুনের সূত্রপাত হয়। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যে ফায়ার সার্ভিস, সেনা, নৌ, বিমান এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ৬ ঘণ্টা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

রাত সাড়ে ৮টার দিকে ফায়ার সার্ভিস থেকে ১৯টি মরদেহ উদ্ধারের খবর নিশ্চিত করা হয়েছে। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্ল্যানিং)  সিদ্দিক জুলফিকার আহমেদ।

তিনি বলেন, ২২ তলা এ বিল্ডিংয়ের ফায়ার ফাইটিং করার জন্য নিজস্ব কোনো ক্যাপাসিটি নাই। বিল্ডিংগুলোতে যতক্ষণ নিজস্ব সক্ষমতা না থাকবে ততদিন এধরনের দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে। হতাহতের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে।

তিনি বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ভেতরে তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে উদ্ধার কাজে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তবে প্রতিটি ফ্লোরেই সার্চ করা হচ্ছে। ভেতরে কোনো হতাহত রয়েছে কি না। এখন পর্যন্ত ৬৮ জনকে এখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহগুলো হাসপাতালে পাঠানো করা হয়েছে। সংখ্যাটা বাড়তে পারে। ডিটেইলস সার্চিংয়ের জন্য আমাদের টিম কাজ করেছে।

‘৫-৭টি ফ্লোর আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নয়-দশতলা থেকে শুরু করে উপরে দিকে ফ্লোরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না’।

আগুন লাগার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, তা এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাবে না। তবে একটুকু বলতে পারি, এ ধরনের বিল্ডিংয়ে সাধারণত ইলেক্ট্রিসিটি থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। ভবন তৈরির সময় ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড না মেনে তৈরি করা হয়। যে কারণে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটছে। আমাদের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা আগুন লাগার কারণ, করণীয় সম্পর্কে সুপারিশ করব। এ ধরনের অবহেলা ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সময় এসেছে। আর ছাড় দেওয়া যাবে না।

‘সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ, র‍্যাব, রেড ক্রিসেন্টসহ অনেক ভলান্টিয়ার কাজ করছে। এসব ভলান্টিয়ারদের আমরাই ট্রেইনাপ করেছি। তারা কাজ করছে’।

এদিকে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) সাজ্জাদ হোসাইন ঘটনাস্থল থেকে জানান, অগ্নিকাণ্ডে ঘটনায় যতগুলো কক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সবগুলো সার্চিং করা হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত প্রয়োজন ততক্ষণ চলবে। আমাদের ফায়ার কর্মীরা কাজ করবে।

নিহতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত এক শ্রীলঙ্কান নাগরিকসহ সাত জনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন- শ্রীলঙ্কার নাগরিক নিরস (৩০), পারভেজ সাজ্জাদ (৪৭), আমেনা ইয়াসমিন (৪০), মামুন (৩৬), আবদুল্লাহ আল ফারুক (৩২), মাকসুদুর (৬৬) ও মনির (৫০)।

Share this post

PinIt

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

scroll to top