ডেস্ক রিপোর্ট, prabartan | প্রকাশিত: ১৬:৩৫, ০৫- ০৩-১৯
ৱচুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সীমান্তবর্তী গ্রাম রাঙ্গিয়ারপোতা। এই গ্রামের শিক্ষিত যুবক মোকাররম হোসেন। ব্যবসার পাশাপাশি চাষাবাদে বেশ আগ্রহী তিনি।
নিজের জমিতে নিত্য নতুন বা বিদেশি ফল-সবজি উৎপাদন করে দেশের মানুষের মধ্যে পরিচিত করানোর শখ তার দীর্ঘদিনের। সেই আগ্রহ থেকেই বিদেশি সবজি বিটরুট চাষ করেছেন তিনি।
দেশে এ সবজির বীজ সংগ্রহ করতে না পারায় পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে বিটরুটের বীজ নিয়ে আসেন তিনি। তারপরই পরিকল্পনা মতো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে তার নিজস্ব আট বিঘা জমিতে বীজ বপন করে যত্ন নিতে শুরু করেন। শীতকালীন সবজি আবাদের সঙ্গে মিল রেখে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বিটরুটের বীজ বপন করা হয়। বীজ বপনের ৭০-৮০ দিনের মধ্যে এ সবজি বিক্রি উপযুক্ত হয়। বীজ বপনের পর থেকেই এ জাতের সবজি বিক্রি উপযুক্ত হওয়ায় বেশ কয়েক ধাপে তা বাজারে বিক্রি করা হয়। এখনো পর্যন্ত স্থানীয় পর্যায়ের বাজারে তেমন সাড়া না পেলেও বড় বড় শহরের সবজি বাজার ও সুপার শপগুলোতে এর চাহিদা অনেক। তাই এসব সবজি ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হচ্ছে। বাজার দামও বেশ ভালো পাওয়ায় খুশি বিটরুট তিনি।
বিটরুট সাধারণত মাটির নিচের সবজি। অনেকটা গাজর কিংবা মুলার মতো করে চাষাবাদ করা হয়। তাই সবজিটি তোলার উপযুক্ত হলেই তা মাটি থেকে গাছসহ উপড়ে ফেলা হয়। বিটরুটের ভেতর ও বাইরের রং গাঢ় লাল।
মোকাররম হোসেন বলেন, যেহেতু প্রথমবারের মতো এ জাতের সবজির আবাদ করেছি তাই ফলন কেমন হয় তা নিয়ে কিছুটা ভয় ছিল। তবে প্রত্যাশার তুলনায় ভালো ফলন পেয়েছি। বাজারে চাহিদাও রয়েছে। এছাড়া বিটরুট আবাদে কোনো কীটনাশক কিংবা বিষ ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না। প্রতি বিঘা জমিতে বিটরুট চাষ করতে খরচ হয়েছে ১২-১৫ হাজার টাকা। বিপরীতে প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রায় ৫০০ কেজি করে বিটরুট পেয়েছি। যা প্রতি কেজি ১০০-১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সেক্ষেত্রে প্রতি বিঘা জমি থেকে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকার সবজি বিক্রি করা সম্ভব।
বিটরুট কীভাবে খাদ্য হিসেবে গ্রহন করা যায়? এমন প্রশ্নের জবাবে এ সবজির নানাবিধ ব্যবহার উল্লেখ করে মোকাররম হোসেন জানান, এই সবজি কাঁচাই খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করা যায়। গাঢ় লাল এই বিটরুট জুস করে, সালাদ করে, যে কোনো মাছের সঙ্গে বা সবজির মতো রান্না করে খাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবাইর মাশরুর জানান, চুয়াডাঙ্গায় বরাবরই ভিন্ন জাতের সবজি উৎপাদন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবার বিটরুট আবাদ করা হয়েছে। এবারই প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিটরুট আবাদ করে বেশ সাড়া পেয়েছেন চাষি। তাই জেলার অন্য কৃষকদের বিটরুট চাষে আগ্রহী করে তুলতে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।